সুযোগ পেয়ে খোলামেলা ভাবেই একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন ওঁরা। কেউ জানতে চান, মামলার দীর্ঘসূত্রীতা থেকে মুক্তির উপায়? কারও জিজ্ঞাস্য সাজা মকুবের উপায়? কেউ শুধোলেন, বন্দিদশাতেও আইন তাঁকে কী অধিকার দিয়েছে। ওঁরা সকলেই হুগলি জেলে বন্দি। কেউ সাজাপ্রাপ্ত, কেউ বিচারাধীন। কেউ আবার অনুপ্রেবেশের অভিযোগে ধৃত। বৃহস্পতিবার হুগলি জেলে বসেছিল বন্দিদের জন্য আইনি সচেতনতা শিবির।
জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ এবং একটি মানবাধিকার সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ওই শিবির হয়। ঘণ্টাতিনেক ধরে বন্দিদশায় নানা সমস্যা এবং তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেই সঙ্গে বন্দিদের আইনি অধিকার নিয়ে অবহিত করা হয়। আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, সংশোধনাগারেও যাতে সম্মানের সঙ্গে বন্দিরা থাকতে পারেন, তা নিয়ে সচেতন করতেই ওই শিবির করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতি তথা সিকিম হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত, চুঁচুড়া আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চৌধুরী হেফাজত করিম, প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মানস বসু, শুভার্থী সরকার, চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব সৌনক মুখোপাধ্যায়, হুগলি জেলের সুপারিন্টেডেন্ট সৌমিক সরকার প্রমুখ।
বন্দিদের আইনি অধিকারের বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন উপস্থিত সংশ্লিষ্ট অফিসাররা। শেষে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। অনেকেই মামলার দীর্ঘসূত্রীতা কেন হচ্ছে? — তা জানতে চান। অনেকে ব্যক্তিগত নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়, সমস্যার কথা জানলে তা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সাহায্য করা হবে। অর্থের অভাবে কেউ আইনজীবী দাঁড় করাতে না পারলে, আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁকে আইনজীবী দেওয়া হবে। শিবিরে চার শতাধিক সাজাপ্রাপ্ত এবং বিচারাধীন পুরুষ ও মহিলা বন্দি ছিলেন। কয়েক জন মহিলা বন্দির সঙ্গে তাঁদের শিশুসন্তানও রয়েছে।