আর পাঁচটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মতো নয়, ওঁদের ইচ্ছে ছিল একটু অন্য রকম কিছু করার। রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় চব্বিশ জন মহিলার সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীই এ বার বাজারে আনছে নিজেদের প্যাকেটজাত রান্নার সামগ্রী। নাম দেওয়া হয়েছে ‘আহার’।
বালি বিধানসভার লিলুয়া এলাকায় চলা সেই স্বনির্ভরগোষ্ঠীর মেয়েরা তাঁদের তৈরি ডাল, সয়াবিন, ছোলার প্যাকেট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়ে শুরু করতে চান পথ চলা। ওই গোষ্ঠীর সদস্য মুনমুন মান্না বলেন, ‘‘আমাদের তৈরি এই সব জিনিস ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়াটাই লক্ষ্য। সেই পথে পা ফেলার আগে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ‘আহার’-এর সামগ্রীগুলি তুলে দিতে চাই।’’
হাওড়া পুরসভার স্বনির্ভর গোষ্ঠী দফতরের সহযোগিতায় ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে ‘অগ্রণী’ ও ‘অগ্রগামী’ নামে দু’টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে কয়েক মাস আগে। প্রতি গোষ্ঠীতে ১২ জন করে সদস্য রয়েছেন। তাঁদেরই আর এক জন গুঞ্জা সাউ জানান, গোষ্ঠী তৈরির পরে মহিলা সদস্যেরা সিদ্ধান্ত নেন, এমন কিছু বানাতে হবে যা সমস্ত বাজারে সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এর পরেই তাঁরা বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনিই প্রথম প্যাকেটজাত রান্নার সামগ্রী বাজারে আনার প্রস্তাব দেন। বৈশালী বলেন, ‘‘মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার কথা মুখ্যমন্ত্রী সব সময়েই বলছেন। তাই এমন প্যাকেটজাত দ্রব্য তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’
ওই বিধায়ক আরও জানান, ট্রেড লাইসেন্স, ফুড লাইসেন্স-সহ সব রকম অনুমতি নিয়েই ওই প্যাকেটজাত সামগ্রী বাজারে আসছে। এমনকি, বড় শপিং মলের বাজারে বিক্রির জন্য প্যাকেটের পিছনে বারকোডও বসানো হয়েছে। এর পরের ধাপে বালিতে এমনই আরও দু’টি গোষ্ঠী তৈরি করে গুঁড়ো মশলা প্যাকেটজাত করা হবে। সে ক্ষেত্রে মশলা তৈরি করবেন গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যেরাই। পাশাপাশি বেলুড়ে তৈরি হবে চিঁড়ে, চাল, মুড়ি-সহ আরও কয়েকটি সামগ্রী। তবে সব দ্রব্যই ‘আহার’ নামে বাজারে আসবে। হাওড়া পুরসভার স্বনির্ভর গোষ্ঠী দফতরের দায়িত্বে থাকা আহেরী দাস বলেন, ‘‘সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেই দু’টি গোষ্ঠী তৈরি করে দিই। মেয়েরা যাতে ব্যবসা বাড়াতে ব্যাঙ্ক ঋণ পান, তারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
ইতিমধ্যেই কলকাতার কয়েকটি নামী হোটেল-সহ একটি নামী রিটেল সংস্থার সঙ্গে ওই প্যাকেটজাত দ্রব্য বিক্রির কথা হয়েছে বলেও জানান বৈশালী। গোষ্ঠীর সদস্যেরা জানান, এখন স্থানীয় বাজারের দোকানগুলিতে ওই দ্রব্য পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দামও নির্ধারিত হচ্ছে বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই।