চিকিৎসায় গাফিলতিতে হাত বাদ কিশোরের, নালিশ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোঘাটের কুমারগঞ্জের মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে কনুইতে চোট পেয়েছিল বিজয়। তবে সেই সময় তাকে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে বাড়িতেই ভাঙা হাড় ঠিক করার চেষ্টা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৭
Share:

পাশে: হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে বিজয়। নিজস্ব চিত্র

ফুটবল খেলতে গিয়ে ডান হাতের কনুইয়ে চোট পেয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বিজয় মান্ডি। সেটা গত ১৬ ডিসেম্বরের ঘটনা। দু’দিন বাড়িতে চিকিৎসার পর তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। আর সেখানেই টানা ১৩দিন চিকিৎসা চলার পর চিকিৎসকরা জানান, ডান হাতের কনুই বাদ দিতে হবে। এরপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন বিজয়ের পরিজনরা। এ বিষয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোঘাটের কুমারগঞ্জের মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়ে কনুইতে চোট পেয়েছিল বিজয়। তবে সেই সময় তাকে হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে বাড়িতেই ভাঙা হাড় ঠিক করার চেষ্টা হয়। তাতে বিপত্তি বাড়ে। এরপর গত ১৯ ডিসেম্বর বিজয়ের হাতে যন্ত্রণা আরও বাড়ার পর তাকে আরামবাগ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, যখন বিজয়কে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়, তখন তার হাতের তালু থেকে কনুই পর্যন্ত অংশের শিরা-উপশিরা একেবারে ছিঁড়ে গিয়েছিল। রাতেই তার হাতে অস্ত্রোপ্রচার করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কৌশিক দাস। কিন্তু তারপরও হাতের কনুই থেকে তালু পর্যন্ত অংশের শিরা ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছিল। দিন কয়েক আগে বিশেষ অস্ত্রোপচারে মাংসপেশি সচল করারও চেষ্টাও সফল হয়নি। এরপরই কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলার সিদ্ধান্তের কথা জানান চিকিৎসকরা।

Advertisement

বিজয়ের বাবা বদ্যিনাথবাবুর আক্ষেপ “স্বীকার করছি, পড়শির কথায় নিজেরা হাতটা নিয়ে টানাটানি না করলেই ভাল হত। কিন্তু হাসপাতাল কেন ১০ দিন ধরে ছেলেটাকে এখানে ফেলে রাখল! কলকাতায় নিয়ে গেলে হয়তো হাতটা ঠিক হয়ে যেত।’’ হাসপাতাল সুপার শিশির নস্করের অবশ্য দাবি, ‘‘চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি। দু’দিন ধরে হাতের পচনের জেরেই এমন অবস্থা। দু’বার অস্ত্রোপচারের পরও কাজ হল না। অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করা হলেও কোনও সুফল মিলত না।’’

চিকিৎসকদের কাছ থেকে সব কিছু শোনার পর কান্না থামছে না বছর আঠারোর বিজয়ের। মায়ের কাঁধে মাথা রেখে সে বলে, “হাতটা না থাকলে পরীক্ষা তো দিতে পারব না। আবার চাষের কাজেও কেউ নেবে না। কী হবে আমার!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন