অনাস্থায় জিতে সিপিএমের হাতে থাকা হুগলির আরও একটি পঞ্চায়েতের দখল নিল শাসক দল তৃণমূল। এ বার পাণ্ডুয়া ব্লকের শিখিরা-চাপ্তা পঞ্চায়েতে ক্ষমতা কায়েম করল তারা। শুক্রবার ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। সিপিএম সদস্যেরা ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ না করায় একতরফা জিতে যায় তৃণমূল।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হুগলিতে বামেদের ফল আশানুরূপ না হলেও পাণ্ডুয়ায় উল্টো চিত্র দেখা গিয়েছিল। ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৩টাই দখল করে তারা। তৃণমূলকে ৩টি পঞ্চায়েত পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতাও বামেরাই দখল করে। এ বার শিখিরা-চাপ্তা পঞ্চায়েত দখল করায় তৃণমূলের হাতে এল চারটি পঞ্চায়েত। সম্প্রতি সিঙ্গুর ব্লকের বারুইপাড়া-পলতাগড় এবং বিঘাটি পঞ্চায়েতে অনাস্থায় জিতে সিপিএমের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। একই পরিস্থিতি হয় সেখানকার নসিবপুর পঞ্চায়েতেও।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর অভিযোগ, “প্রলোভন এবং ভয় দেখিয়ে তৃণমূল আমাদের পঞ্চায়েতগুলি দখল করতে চাইছে। পাণ্ডুয়ার পঞ্চায়েতটিও একই কায়দায় ওরা দখল করল।” জেলা সিপিএমের নেতার দাবি, “শিখিরা-চাপ্তা পঞ্চায়েতে যে হেতু প্রধানের পদ সংরক্ষিত, তাই তফসিলি জাতিভুক্ত সদস্যকেই টোপ দিয়ে দলে নিয়েছে ওরা।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনিসুল ইসলামের দাবি, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই পঞ্চায়েত সদস্য দেবশ্রী দাস সিপিএম ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। এ বার পঞ্চায়েতে উন্নয়ন হবে। দেবশ্রীদেবীই প্রধান হবেন।”
শিখিরা-চাপ্তা পঞ্চায়েতের আসন ১২টি। গত পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম এবং তৃণমূল ৫টি এবং বিজেপি দু’টি আসন পায়। বিজেপি তৃণমূলকে সমর্থন করলেও তারা বোর্ড গড়তে পারেনি। বোর্ড গড়ে সিপিএম। কেননা, প্রধানের আসনটি তফসিলি জাতিভুক্ত মহিলার জন্য সংরক্ষিত। তৃণমূল বা বিজেপির জয়ী সদস্যদের মধ্যে তেমন কেউ ছিলেন না। প্রধান হন সিপিএমের লক্ষ্মী বাউল। মাস খানেক আগে তফসিলি জাতিভুক্ত সিপিএম সদস্য দেবশ্রী দাস (বাউল দাস) তৃণমূলে যোগ দেন। দিন পনেরো আগে পাঁচ তৃণমূল সদস্য লক্ষ্মীদেবীর নামে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন প্রশাসনের কাছে। প্রধান পরিষেবা দিতে পারছেন না ও স্বেচ্ছাচারী মনোভাব নিয়ে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। লক্ষ্মীদেবী অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, “প্রধানের আসন সংরক্ষিত ছিল বলেই ওই পদে বসেছিলাম। তবে, আমাদের দলের সদস্যা কেন তৃণমূলে গেলেন বলতে পারব না। শরীর খারাপ থাকায় ভোটাভুটিতে যেতে পারিনি। আর অন্য কেউ কেন গেল না বলতে পারব না।”