চলতি বছরের গোড়া থেকেই হাওড়া জেলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্প। ফলে, প্রায় থমকে গিয়েছে বাড়ি বাড়ি শৌচালয় নির্মাণের কাজ। অর্থাভাবের জেরেই এই পরিস্থিতি বলে দাবি ওই প্রকল্পের কর্তাদের। কাজে গতি কবে আসবে, বলতে পারছে না কোনও পক্ষই।
জেলায় ওই প্রকল্পের কো-অর্ডিনেটর তপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জেলায় ১৪ কোটি টাকা বকেয়া ছিল। সেই টাকা চাওয়া হয়েছিল। মাসখানেক আগে মাত্র তিন কোটি টাকা মিলেছে। বরাদ্দ মিললেই কাজে গতি ফিরবে।’’ টাকার অভাবের কথা মেনে নিয়েছেন রাজ্যের স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্পের সচিব দিব্যেন্দু সরকার। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের জন্য কেন্দ্রের বরাদ্দ এখনও হাতে আসেনি। রাজ্য সরকার স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্প আপাতত চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১০০ কোটি টাকা অগ্রিম দিয়েছে। সেই টাকায় যতটা সম্ভব কাজ চালানো হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ায় সমীক্ষা চালিয়ে প্রায় দু’লক্ষ শৌচালয়হীন বাড়ি চিহ্নিত করা হয়। সেই সব বাড়িতেই শৌচালয় তৈরির পরিকল্পনা করা হয় স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্পে। কেন্দ্র সরকার এ জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ। কিন্তু রাজ্য সরকার প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্যমাত্রা এক বছর এগিয়ে এনে ২০১৬-র মার্চে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জেলায় মাত্র ৩০ হাজারের মতো বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম ছ’মাসে কমপক্ষে ৫০ হাজার বাড়িতে শৌচালয় তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে থমকে রয়েছে অনেক কাজ।
একটি শৌচালয় তৈরিতে বরাদ্দ ১০ হাজার ৯০০ টাকা। এর মধ্যে ৯০০ টাকা দেন উপভোক্তা। বাকি টাকা দেওয়া হয় স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্প থেকে। ব্লক স্তরের এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, অনেক ক্ষেত্রে অন্য খাত থেকে টাকা মঞ্জুর করে কাজ করতে হচ্ছে। দ্রুত বকেয়া টাকা না পাওয়া গেলে সমস্যায় পড়তে হবে।
বাগনানের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উলুবেড়িয়া-২, বাগনান-১ ও বাগনান-২ ব্লকের বাড়ি বাড়ি শৌচালয় তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে। সংস্থার এক কর্তা জানান, প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। কর্মীদের বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।