মঙ্গল প্রাঙ্গণের সেই রাস্তা। ছবি: তাপস ঘোষ।
ভোট এলেই এলাকায় প্রচারে আসা রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা প্রতিশ্রুতি দেন এ বার আলো আসবে, সারানো হবে রাস্তা। কেটে যায় ভোট। কিন্তু আলো আর জ্বলে না। সারানো হয় না রাস্তাও। দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে এমনটাই দেখে আসছেন বাসিন্দারা। একই সঙ্গে তাঁদের খেদ এবং অভিযোগ, আগের বাম সরকারের আমলেও অন্ধকার রাস্তায় হেঁটেছি। সরকার পরিবর্তনের পরেও সেই অন্ধকারেই পথ হাঁটছি। রাস্তাও সারানো হয়নি।
হুগলি-চঁুচুড়া পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যেই পড়ে মঙ্গল প্রাঙ্গণ। জেলা সদরে ঢোকার মুখে খাদিনা মোড়ের কাছে মহাত্মা গাঁধী রোডের ধারে সরু রাস্তা। রাস্তা দিয়ে ভিতরে ঢুকলেই মঙ্গল প্রাঙ্গণ অঞ্চল। হিন্দু-মুসলমান সব সম্প্রদায়ের মানুষেরই বাস এখানে। ৩৫ থেকে ৪০টি পরিবারের বাস। দিনে সমস্যা না হলেও অন্ধকার নামলেই চলাফেরায় সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা। অন্ধকারে বিপদ মাথায় করেই পথ চলতে হয় তাঁদের। বাসিন্দাদের অভিযোগ দীর্ঘ ৪০বছর ধরে এমন অবস্থা চললেও এবং পুরসভা থেকে বিদ্যুত্ দফতর, নানা মহলে জানালেও কোনও লাভ হয়নি। শুধু আলোই নয়, সংস্কারের অভাবে বেশ কিছু জায়গায় রাস্তাও বেহাল।
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, বামেদের দখলে পুরবোর্ড থাকার সময় এলাকায় আলোর ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস পেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর কাজে পরিণত হয়নি। এখন রাজ্যে তৃণমূল সরকারের আমলে তাদের দখলে থাকা পুরবোর্ডও সেই একই আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রাস্তায় আলো আর জ্বলছে না। সন্ধ্যার পর অন্ধকারে চলাফেরায় সমস্যার পাশাপাশি রাস্তা খারাপ থাকার ফলে গর্তে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে প্রায়ই। স্থানীয় বাসিন্দা সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চল্লিশ বছর ধরে এলাকায় বাস করছি। কিন্তু রাস্তার আলোর ব্যবস্থা আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারল না। অন্ধকারে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকের হাত পা ভেঙেছে। নর্দমায় পড়ে অনেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। কিন্তু প্রশাসনের তরফে কেউই এ দিকে নজর দিতে পারলেন না।’’
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই এলাকার রাস্তায় আলো না থাকার বিষয়টি জানা ছিল না। তবে ওখানে আলো লাগানোর জন্য বিদ্যুতের সংযোগ আছে কিনা তা দেখতে হবে।পুরপ্রতিনিধি পাঠিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যত শীঘ্র সম্ভব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’
পুরপ্রধানের এমন বক্তব্যের পরেও নিশ্চিত হতে পারছেন না এলাকার মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, পুরপ্রধানের উদ্যোগ ভাল, তবে না আঁচালে বিশাস নেই।