ইন্দিরা আবাস প্রকল্প রূপায়ণে জোরদার হল সামাজিক নিরীক্ষা

ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম ত্রুটি-বিচ্যুতি রুখতে এ বার সামাজিক নিরীক্ষার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হল হুগলি জেলায়। বিপিএল তালিকাভুক্ত অপেক্ষমাণ উপভোক্তাদের তালিকা থেকে শুরু করে বাড়ি নির্মাণের গতি বা উপভোক্তা সঠিক সময়ে টাকা পেয়েছেন কিনা সবই যাচাই করে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পাঠাবে সামাজিক নিরীক্ষক দল। তার উপর ভিত্তি করেই এ বার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৪৫
Share:

ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম ত্রুটি-বিচ্যুতি রুখতে এ বার সামাজিক নিরীক্ষার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হল হুগলি জেলায়। বিপিএল তালিকাভুক্ত অপেক্ষমাণ উপভোক্তাদের তালিকা থেকে শুরু করে বাড়ি নির্মাণের গতি বা উপভোক্তা সঠিক সময়ে টাকা পেয়েছেন কিনা সবই যাচাই করে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট পাঠাবে সামাজিক নিরীক্ষক দল। তার উপর ভিত্তি করেই এ বার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

গত ৩০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসন সমস্ত ব্লকে এক নির্দেশে জানায়, ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষে অনুমোদিত ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পে নির্মিত বাড়িগুলির প্রকৃত হালচাল নিয়ে সামাজিক নিরীক্ষার ব্যবস্থা করে সেই রিপোর্ট আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাঠাতে হবে।

অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সুমন ঘোষ বলেন, “ইন্দিরা আবাসের ক্ষেত্রে গত বছর থেকেই সামাজিক নিরীক্ষার ব্যবস্থা শুরু করেছি আমরা। এ বার সেই প্রক্রিয়াকেই আরও জোরদার করা হচ্ছে। আপাতত ওই কাজে গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ আইন বলবৎ করার জন্য যে সামাজিক নিরীক্ষার দলগুলি কাজ করছে, তাদেরই নতুন কাজে লাগানো হবে। পরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও ওই কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।”

Advertisement

দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী বা সহায়-সম্বলহীন পরিবারের নতুন ঘর তৈরিতে আর্থিক সহায়তার জন্য কেন্দ্র সরকারের ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পটি চালু হয় ১৯৯৬ সাল নাগাদ। বিপিএল তালিকাভুক্তদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় স্থায়ী অপেক্ষমাণ উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি হয় ২০০৮-০৯ অর্থবর্ষে। সেই তালিকা অনুযায়ী ক্রমান্বয়ে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তা নির্বাচনের কথা। কিন্তু পঞ্চায়েত স্তরে অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রভাব এবং হস্তক্ষেপে সেই তালিকা না মেনে অন্য উপভোক্তাকে সরকারি সুবিধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়াও টাকা সদ্ব্যবহার সংক্রান্ত নানা বিচ্যুতির নজিরও প্রায়ই ওঠে।

প্রকল্পের স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা বজায় রাখার জন্য নিয়মিত সামাজিক নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও এত দিন কেন বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও উত্তর মেলেনি প্রশাসনের কাছ থেকে। প্রশাসন জানিয়েছে, এ বার থেকে সামাজিক নিরীক্ষক দলকে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার বিপিএল তালিকাভুক্ত উপভোক্তাদের স্থায়ী অপেক্ষমাণ তালিকা বা বাড়ি নির্মাণের গতি এবং উপভোক্তা সঠিক সময়ে টাকা পেয়েছেন কিনা তা যাচাই করলেই হবে না, একই সঙ্গে তাদের নির্দিষ্ট অর্থবর্ষে উপভোক্তা নির্বাচনের ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ তালিকার কোনও পরিবর্তন হলে সেই পরিবর্তনের ন্যায্যতাও যাচাই করে ব্যাখ্যা দিতে হবে। নির্মিত বা নির্মীয়মাণ বাড়ির ধূমহীন চুলা এবং স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার-সহ সেগুলির গুণগত মান, বাড়ি নির্মাণের জায়গার বিবরণ, সর্বোপরি উপভোক্তাদের কোনও ক্ষোভ বা অভিযোগ সঠিক সময়ে সঠিক ভাবে প্রতিবিধান করা হয়েছে কিনা সে সবও দেখতে হবে। এই সব তথ্য সরবরাহের ভিত্তিতে কোনও অনিয়ম দেখা গেলে তা নিষ্পত্তি করবে ব্লক এবং জেলা প্রশাসন। বেশ কয়েকটি ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, সামাজিক নিরীক্ষক দলকে ইতিমধ্যেই ওই কাজে লাগানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন