গোঘাট থেকে কলকাতার পথে গাড়ি দুর্ঘটনা, মৃত ৫

গোঘাট থেকে গাড়িতে কলকাতায় যাওয়ার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল পাঁচ জনের। এর মধ্যে তিন জন একই পরিবারের। আহত তিন জন। বুধবার সকালে হুগলির হরিপালের হামিরাগাছি এলাকায় তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটি রোডে একটি মিনি ট্রাকের সঙ্গে গাড়িটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন বুলা নায়েক (৪৫) ও তাঁর স্বামী অমিত (৫৩), ছেলে অর্ঘ্য (২৫), গাড়ির চালক সন্দীপ দে (৪০) ও তাঁর বন্ধু পুলক মাঝি (৪৫)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিপাল শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪৬
Share:

দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকে ক্রেন দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।—নিজস্ব চিত্র।

গোঘাট থেকে গাড়িতে কলকাতায় যাওয়ার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল পাঁচ জনের। এর মধ্যে তিন জন একই পরিবারের। আহত তিন জন।

Advertisement

বুধবার সকালে হুগলির হরিপালের হামিরাগাছি এলাকায় তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটি রোডে একটি মিনি ট্রাকের সঙ্গে গাড়িটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন বুলা নায়েক (৪৫) ও তাঁর স্বামী অমিত (৫৩), ছেলে অর্ঘ্য (২৫), গাড়ির চালক সন্দীপ দে (৪০) ও তাঁর বন্ধু পুলক মাঝি (৪৫)। অমিতবাবুদের বাড়ি গোঘাটের কাঁঠালি এলাকায়, সেখানকারই একটি সমবায় সমিতির ম্যানেজার ছিলেন তিনি। সন্দীপ ও পুলকের বাড়ি আরামবাগের বাতানলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত দু’টি গাড়িরই গতি খুব বেশি ছিল। মিনি ট্রাকটি আটক করা হলেও চালক পালিয়েছে।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুলাদেবী কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। কলকাতার একটি নার্সিংহোমে এ দিন তাঁর ডায়ালিসিস করানোর কথা ছিল। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ বুলাদেবীর দাদা সঞ্জিত্‌ পালের গাড়িতে চেপে তাঁরা কলকাতা রওনা হন। সঞ্জিত্‌বাবু, তাঁর স্ত্রী-মেয়েও গাড়িতে ছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ দুর্ঘটনা ঘটে। গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার পাশে নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথম উদ্ধারকাজে নামেন। পরে হরিপাল থানার পুলিশও চলে আসে। ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়। আহত চালক, সঞ্জিত্‌বাবু, তাঁর স্ত্রী এবং ন’বছরের মেয়েকে হরিপাল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চালক সেখানেই মারা যান। বাকিদের কলকাতায় নার্সিংহোমে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার খবর পৌঁছতেই অমিতবাবুদের গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। পড়শিদের অনেকের বাড়িতেই হাঁড়ি চড়েনি। অমিতবাবুর ছোট ছেলে, বছর তেরোর রাহুল প্রতিবন্ধী, হাঁটতে-চলতে পারে না। সে ছাড়া আছেন অমিতবাবুর অশীতিপর মা গীতাদেবী। তিনিও বয়সের ভারে ন্যুব্জ। তাঁদের দু’জনের দেখভাল কে করবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আত্মীয়-পড়শিরা। সকাল থেকেই বাবা-মায়ের ফোনের অপেক্ষায় ছটফট করছিল রাহুল। বিকেলে তাঁদের মৃত্যুসংবাদ শোনা ইস্তক ক্রমাগত কেঁদে চলেছে সে। গীতাদেবী বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। খবর পেয়ে তাঁর চার মেয়েই আপাতত শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে এসেছেন। বৃদ্ধার সেজো মেয়ে অনিমা দে বলেন, “কয়েক বছর আগে আমাদের ছোট ভাই বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। তার পরে এই ঘটনা! রাহুল তো চলতেই পারে না। কী যে হবে!” প্রতিবেশী দুলাল সরকার বলেন, “গীতাদেবীও ভাল করে হাঁটতে পারেন না। রাহুলকে কে দেখবে?” শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে মৃতদেহগুলি ময়না-তদন্তের পরে রাতে দেহগুলি সত্‌কার করা হয়েছে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন