গরম পড়তেই জলের দাবিতে অবরোধ

গরম পড়তেই পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র হয়েছে পাণ্ডুয়ার বেনেপাড়া গ্রামে। দ্রুত বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহের দাবিতে বুধবার সকালে গ্রামের ছ’টি জায়গায় ঘণ্টাখানেক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। বহু মহিলাও সামিল হন। শেষে পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে। পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের অভিজিত্‌ রায় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডুয়া শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৫ ০১:৩৭
Share:

জলের প্রতীক্ষায়। —নিজস্ব চিত্র।

গরম পড়তেই পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র হয়েছে পাণ্ডুয়ার বেনেপাড়া গ্রামে। দ্রুত বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহের দাবিতে বুধবার সকালে গ্রামের ছ’টি জায়গায় ঘণ্টাখানেক অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। বহু মহিলাও সামিল হন। শেষে পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে। পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের অভিজিত্‌ রায় সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

ওই গ্রামে হাজার ত্রিশেক মানুষের বাস। কিছু বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ বাড়িতেই তা নেই। ফলে, পানীয় জলের জন্য গ্রামবাসীদের বেশির ভাগকেই নির্ভর করতে হয় মূলত নলকূপ বা রাস্তার ট্যাপকলগুলির উপরে। কিন্তু বাড়ি বা রাস্তার ট্যাপকলগুলি দিয়েও সুতোর মতো জল পড়ে। ফলে, পানীয় জল সংগ্রহ করতে কালঘাম ছোটে গ্রামবাসীদের। পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন দফতরে বহু আবেদন-নিবেদনেও সমস্যার সুরাহা হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ।

এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্যই বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ তাঁরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। অবরোধের জেরে পাণ্ডুয়া-কালনা ১৩ নম্বর রুট-সহ স্থানীয় কয়েকটি রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। গ্রামবাসীরা দাবি করতে থাকেন, ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই পঞ্চায়েতের কর্তাদের দ্রুত সমস্যা মেটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ লাঠি উচিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। ঘটনাস্থলে যান সংশ্লিষ্ট পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের অভিজিত্‌ রায়। পরে গ্রামবাসীদের নিয়ে আলোচনাতেও বসেন।

Advertisement

তুলিকা দত্ত নামে এক গৃহবধূ বলেন, “বহু বাড়িতেই জলের সংযোগ নেই। রাস্তার কলেও সরু সুতোর মতো জল পড়ে। খাবার জলটুকু পাওয়াই যেন দুষ্কর হয়ে উঠছে।” ঝর্ণা দত্ত নামে আর এক বধূর কথায়, “এ ভাবে চললে গরমের সময় মারাত্মক সমস্যা হবে। যত দ্রুত সম্ভব মোটা পাইপলাইন বসিয়ে জলের জোগানের ব্যবস্থা করা হোক।” অলোক দে, আশিস বিশ্বাসদের কথায়, “পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক অফিস সব জায়গায় চিঠি দিয়েছি। কোনও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়েই অবরোধে নামতে হয়েছে।”

কেন গ্রামের বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ এখনও পুরোপুরি দেওয়া গেল না?

পঞ্চায়েতের এক কর্তার দাবি, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সাতশোর কিছু বেশি বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। পরে অনেকেই পাইপলাইন কেটে বেআইনি ভাবে বাড়িতে জলের সংযোগ নিয়েছেন। তা ছাড়া, বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছনোর উপযুক্ত পরিকাঠামোও তৈরি করা যায়নি। প্রধান বলেন, “গ্রামে জলের যেটুকু সংযোগ দেওয়া গিয়েছে, সেই বাবদই মাসে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়। টাকার অভাবে বাকি কাজ করা যাচ্ছে না। পঞ্চায়েত সমিতির কাছ থেকে জলের জন্য ২৬ লক্ষ টাকা পাওনা আছে আমাদের। ওই টাকা পেলে এক মাসের মধ্যে জলের সমস্যা পুরোপুরি মিটিয়ে ফেলা যাবে।” পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের চম্পা মাঝির দাবি, “টাকাটা ব্লক অফিসে আছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলব।” বিডিও নবনীপা সেনগুপ্ত ওই টাকা পঞ্চায়েতে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান।

পাণ্ডুয়া থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের সিপিএম সদস্য সৌরেন্দ্র নাথ বসু বলেন, “বেআইনিভাবে প্রচুর বহু জায়গায় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই বৈধভাবে যাঁরা সংযোগ নিয়েছেন তাঁরা জল পাচ্ছেন না।” পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত স্তরে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি কমিটি করা হয়েছে। তাঁরাই বিষয়টি দেখাশোনা করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন