গ্রেফতার ২

চণ্ডীগড়ের যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার পাণ্ডুয়ার কিশোরী

ভাল কাজ দেওয়ার নাম করে এক যুবতীকে ভিন্ রাজ্যে নিয়ে গিয়ে নিষিদ্ধপল্লিতে আটকে রাখা হয়েছিল। সেখানে বিক্রির জন্য দর-কষাকষি চলছিল মেয়েটির। এমনই অভিযোগ পেয়ে চণ্ডীগড়ে হানা দিয়ে আদিবাসী মেয়েটিকে উদ্ধার করে আনল হুগলির পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। মেয়ে ফিরে আসায় ধরে প্রাণ এসেছে তাঁরা বাড়ির লোকজনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:১৫
Share:

ভাল কাজ দেওয়ার নাম করে এক যুবতীকে ভিন্ রাজ্যে নিয়ে গিয়ে নিষিদ্ধপল্লিতে আটকে রাখা হয়েছিল। সেখানে বিক্রির জন্য দর-কষাকষি চলছিল মেয়েটির। এমনই অভিযোগ পেয়ে চণ্ডীগড়ে হানা দিয়ে আদিবাসী মেয়েটিকে উদ্ধার করে আনল হুগলির পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। মেয়ে ফিরে আসায় ধরে প্রাণ এসেছে তাঁরা বাড়ির লোকজনের।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম মহাদেব হালদার এবং বাবুলাল সরকার। দু’জনেরই বাড়ি বর্ধমানের জৌগ্রামে। তবে তারা পাকাপাকি ভাবে চণ্ডীগড়েই থাকে। হুগলির পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে ওই রাজ্যে পুলিশের একটি দল পাঠানো হয়েছিল। মেয়েটিকে উদ্ধার করা গিয়েছে। দু’জন ধরা পড়েছে। ওই চক্রে জড়িত অন্যদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর বাইশের ওই যুবতী পাণ্ডুয়ার রামেশ্বরপুরের বাসিন্দা। তিনি ডানকুনির একটি কারখানায় কাজ করছিলেন। মাসখানেক আগে পরিচিত কয়েক জন তাঁকে ভাল কাজের দেখিয়ে তাঁকে চণ্ডীগড়ে নিয়ে যায়। অভিযোগ, চণ্ডীগড়ের বাপুধাম এলাকায় একটি নিষিদ্ধপল্লিতে তোলা হয় তাঁকে। সেখানেই আটকে রেখে দরদাম চলতে থাকে। পুলিশকে মেয়েটি জানিয়েছেন, ওই জায়গা থেকে তাঁর পালানোর রাস্তা ছিল না। তবে, ওই পতিতাপল্লির কয়েক জন মহিলা তাঁকে বাড়িতে ফোন করার সুযোগ করে দেন। বাড়িতে ফোন করে বিপদের কথা জানান ওই যুবতী। তার পরেই বাড়ির লোকজন পুলিশের দ্বারস্থ হন। পাণ্ডুয়া থানায় এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।

Advertisement

অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্তে নামে। ফোনের সূত্র ধরে চণ্ডীগড়ের হদিশ পান তাঁরা। এর পরেই পাণ্ডুয়া থানার ওসি প্রদীপ দাঁ চণ্ডীগড়ে পুলিশ পাঠান। স্থানীয় সার্কেল ইনস্পেক্টর ইন্দ্রজিৎ পালও তদন্তের কাজে তদারকি করেন। তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানিয়েছেন, ওই পল্লিতে একটি বাড়ির তিন তলায় মেয়েটিকে আটকে রাখা হয়েছিল। রবিবার সেখানকার স্থানীয় থানার পুলিশ এলাকা ঘিরে ফেলে। তার পরেই মেয়েটিকে বের করে আনতে সমর্থ হন তদন্তকারীরা। সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয় মহাদেব এবং বাবুলালকে।

পুলিশ জানায়, চণ্ডীগড়ের আদালত ধৃতদের ট্রানজিট রিম্যান্ড দেয়। শুক্রবার তাদের চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে দু’জনকেই ৭ দিন পুলিশ হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। উদ্ধার হওয়া যুবতীকে বাড়ির লোকজনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার বলেন, “ধৃতেরা নারী পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। এখানে যেমন তাদের লোক আছে, তেমনি ওই রাজ্যেও আছে। দলে মহিলাও আছে। সবাইকেই ধরা হবে।”

পুলিশের বক্তব্য, মেয়েটির অসহায়তার কথা বুঝে ওই নিষিদ্ধপল্লির মহিলারা গোপনে পাশে না দাঁড়ালে তাঁকে উদ্ধার করা কার্যত অসম্ভব হত। কেননা, সে ক্ষেত্রে মেয়েটির পক্ষে বাড়িতে খবর পাঠানো মুশকিল হত। তা ছাড়া, মোবাইল ফোনের টাওয়ার সন্ধান করেই ওই জায়গার নাম পাওয়া যায়। সেই সূত্রই শেষ পর্যন্ত পুলিশকে মেয়েটির কাছে পৌঁছে দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন