গোলমালে জখম মহিলা।
জলের দাবিতে এ বার রক্ত ঝরল হাওড়ায়।
পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পে পাইপলাইন মেরামতির জেরে মঙ্গলবারও জলসঙ্কট অব্যাহত ছিল। রবিবার থেকে গোটা শহর নির্জলা থাকার পরে এ দিন সকালে শহরের কয়েকটি এলাকায় পুরসভার কলে সুতোর মতো জল আসে। আর সাতসকালে সেই জল নিতেই গিয়েই মধ্য হাওড়ার পূর্বতন যোগমায়া সিনেমার কাছে হরিজন বস্তিতে আক্রান্ত হন এক মহিলা। অভিযোগ, রড দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দিন পরে কলে জল এসেছে শুনে বালতি নিয়ে জল আনতে যান হরিজন বস্তির বাসিন্দা গীতা হরি নামে এক মহিলা। তখনই লাইন দেওয়া দিয়ে কয়েক জন যুবকের গোলমাল বেধে যায় তাঁর। অভিযোগ, এর পরেই ওই যুবকেরা রড ও লাঠি দিয়ে মহিলাকে মারধর করেন। গীতাদেবীর মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। খবর পেয়ে বাড়ির লোকজন গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে স্থানীয় চার যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।
এ দিন সকালের এই ঘটনা কার্যত প্রমাণ করে দেয় গত ৭২ ঘণ্টা ধরে জল না থাকায় শহরের সামগ্রিক পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে পৌঁছেছিল। এবং কার্যত তা বুঝতে পেরেই এ দিনই পাইপ লাইন মেরামতির কাজ শেষ করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন হাওড়ার পুরকর্তা থেকে রাজ্যের মন্ত্রীরা। পরিস্থিতি জানতে চেয়ে দিনভর দফায় দফায় পুরকর্তাদের ফোন করেছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বটানিক্যাল গার্ডেনে প্রকল্পের ‘ইনটেক পয়েন্টে’ যেখানে ৩০ ফুট নীচে মাটি কেটে পাইপলাইনের কাজ চলছিল, সেই কাজের তদারকি করতে ঘটনাস্থলে যান খোদ মেয়র রথীন চক্রবর্তী থেকে মধ্য হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়-সহ মেয়র পারিষদ (জল) অরুণ রায়চৌধুরী ও পুরসভার পদস্থ কর্তারা।
মেয়রের দাবি, যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে এ দিন দুপুরের মধ্যে পাইপলাইন মেরামতির কাজ শেষ করার পরে রাতেই জল সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। তবে মেয়র বা মেয়র পারিষদ মঙ্গলবার রাত থেকে শহরে স্বাভাবিক জল সরবরাহ চালু হওয়ার কথা বললেও অভিযোগ, রাতে অধিকাংশ ওয়ার্ডে জল পৌঁছয়নি। ফলে তিন দিন নির্জলা থাকার পরেও হাওড়ায় জলের হাহাকার মেটেনি।