বেহাল এই পথ পেরোতে অতিরিক্ত এক ঘণ্টা সময় লাগে যাত্রীদের।—নিজস্ব চিত্র।
দৈর্ঘ্য সাকুল্যে ১০ কিলোমিটার। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পরে রাস্তা পাকা করার জন্য টাকা বরাদ্দ হয়। এর পর চার কিলোমিটার অংশে পিচ ফেলে পাকা করা হলেও বাকি অংশের কাজ পড়েই রয়েছে। ১০ বছর কেটে গেলেও সেই কাজ শুরু হয়নি। অর্ধেক রাস্তা ভাল হলেও বাকি অংশ সংস্কারের অভাবে ভেঙে গিয়েছে। যাতায়াতে সমস্যায় পড়েছেন হাওড়ার আমতা-২ ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা।
আমতা জয়পুর পুরনো হাসপাতাল থেকে কুলিয়া ঘাট আট কিলোমিটার রাস্তা। জেলা পরিষদের গ্রামোন্নয়ন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে রাস্তা পাকা করার জন্য ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। সিদ্ধান্ত হয় দু’টি ভাগে রাস্তার কাজ করা হবে। সেইমতো জয়পুর পুরনো হাসপাতাল থেকে ঝামটিয়া সামন্তপাড়া পর্যন্ত একটি অংশে প্রথম এবং সামন্তপাড়া থেকে কুলিয়া ঘাট সংলগ্ন কাশমলি পোল পর্যন্ত বাকি অংশে পরবর্তী পর্যায়ে কাজের সিদ্ধান্ত হয়। ২০০৫ নাগাদ প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরুর পরে বছর তিনেকের মধ্যে তা শেষও হয়ে যায়। কিন্তু তার পর পরবর্তী পর্যায়ের কাজ আর হয়নি। ফলে ওই অংশের রাস্তা সংস্কারের অভাবে একেবারেই বেহাল। যত্রতত্র খানাখন্দে ভর্তি রাস্তায় চালাফেরাই দায় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ এলাকার মানুষের। জেলা পরিষদের দাবি, রাস্তা পাকা হবে বলে বাকি অংশে যে বোল্ডার ফেলা হয় তা বেশ কয়েকটি বর্ষায় ধুয়ে সাফ হয়ে গিয়েছে। ফলে ঠিকাদার কাজ করতে রাজি হয়নি। তার পরে নতুন করে আর ওই অংশ পাকা করার পরিকল্পনাও হয়নি। ভোগান্তি থেকেই গিয়েছে।
বাম আমলে জেলা পরিষদের তরফে রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলেপমেন্ট স্কিমে রাস্তাটি নতুন করে করার জন্য গ্রামোন্নয়ন দফতরে প্রকল্প পাঠানো হয়। তত্কালীন পূর্ত কমার্ধ্যক্ষ আনন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “স্কিম পাঠানোর পরে গ্রামোন্নয়ন দফতরের থেকে সাড়া মেলেনি। ক্ষমতার হাতবদল হওয়ায় কিছু জানা যায়নি।” পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কল্যাণ ঘোষকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি কি অবস্থায় আছে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।” বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) চৈতালি চক্রবর্তীও খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এই রাস্তাটি তৈরি হলে ঝামাটিয়া, কাশমলি, ভাটোরা, পোড়াবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। প্রায় এক ঘণ্টা সময়ও বাঁচবে তাঁদের। কারণ, স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য খারাপ রাস্তার জন্য এখন তাঁদের কল্যাণপুর হয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে। কাশমলির বাসিন্দা শক্তি দলুই, ভাটোরার বাসিন্দা কাশী বেরা এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অর্ধেন্দু আলু বলেছেন, “রাস্তাটি হলে প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্য জয়পুরে যাতায়াতে খুবই সুবিধা হবে। উপকৃত হবেন এলাকার মানুষও।”