দু’দিন কাবার, এখনও অধরা দুষ্কৃতীরা

হাওড়ার সালকিয়ায় শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে যুবককে মারধরের ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাশাপাশি পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে বিবিবাগান এলাকায় একটি ক্লাবের সন্ধান মিলেছে। মূলত ওই ক্লাবের সামনেই ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। পুলিশ জেনেছে, ওই ক্লাবটির মাথায় রয়েছেন তৃণমূলের এক নেতা। অভিযুক্ত পাঁচ যুবকও ওই ক্লাবেরই সদস্য। পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, ওই ক্লাবে আর কাদের আসা যাওয়া ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সালকিয়া শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০২
Share:

হাওড়ার সালকিয়ায় শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে যুবককে মারধরের ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না। যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাশাপাশি পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে বিবিবাগান এলাকায় একটি ক্লাবের সন্ধান মিলেছে। মূলত ওই ক্লাবের সামনেই ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। পুলিশ জেনেছে, ওই ক্লাবটির মাথায় রয়েছেন তৃণমূলের এক নেতা। অভিযুক্ত পাঁচ যুবকও ওই ক্লাবেরই সদস্য। পুলিশ জানার চেষ্টা করছে, ওই ক্লাবে আর কাদের আসা যাওয়া ছিল।

Advertisement

এ দিকে, প্রহৃত যুবক অরূপ ভাণ্ডারীর শারীরিক অবস্থার এ দিনও কোনও উন্নতি হয়নি। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক এখনও কোমায় আচ্ছন্ন রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।

বুধবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বাঁধাঘাটে সরস্বতী প্রতিমার বিসর্জনের সময়ে মহিলাদের উত্ত্যক্ত করা নিয়ে কয়েক জন যুবকের সঙ্গে গোলমাল বাধে অরূপ এবং তাঁর এক বন্ধু অভিজিৎ বসুর। তখনকার মতো ব্যাপারটি মিটে গেলেও বিসর্জন সেরে ফেরার পথে বাড়ি থেকে মিনিট পাঁচেক দুরে ওই যুবকদের হাতে আক্রান্ত হন অরূপ ও অভিজিৎ। প্রথমে অভিজিৎকে মেরে রাস্তার পাশের একটি বড় নর্দমায় ফেলে দেওয়া হয়। তার পরে অরূপকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মাথায় মেরে পালিয়ে যায় ওই যুবকেরা। অরূপের পরিবারের তরফে বৃহস্পতিবার গোলাবাড়ি থানায় শুভম দুবে, আনন্দ প্রসাদ, বরুণ শর্মা, সন্দীপ তিওয়ারি ও রাজু তিওয়ারির নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এলাকাবাসীর দাবি, অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনজিৎ রাফেলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।

Advertisement

যদিও এ দিন মনজিৎ ফের দাবি করেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা হচ্ছে। ওরা তৃণমূলের কেউ নয়। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও নেই। পুলিশ ওদের খুঁজে বার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

এ দিন দুপুরে বিবিবাগান এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ঘটনাস্থল হৃষিকেশ ঘোষ লেনের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের জটলা। অরূপের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সকলেই। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় বিশাল বাহিনী মোতায়েন করেছে পুলিশ। এ দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা। এক পদস্থ অফিসার জানান, ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা অভিযুক্তেরা। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। তবে পাঁচ জনের মধ্যে চার জনের বাড়িই তালাবন্ধ। একমাত্র আনন্দ প্রসাদের বাড়িতে তাঁর মা রয়েছেন। তবে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু জানা যায়নি।

এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, থানা অভিযোগই নিয়েছে পরদিন সকালে। পুলিশ ঘটনার রাতেই সক্রিয় হলে অভিযুক্তেরা পালানোর সময় পেত না। স্থানীয় বাসিন্দা এক প্রবীণ অরবিন্দ ঘোষ বলেন, “ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে দিন কাটছে। পুলিশ আগে সক্রিয় হলে অপরাধীরা পালাতে পারত না।”

এ দিন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক অশোক ঘোষ বলেন, “আক্রমণকারীরা তৃণমূলের হোক বা যে কোনও দলের, পুলিশের উচিত অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করা।”

হাওড়ার পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য সমস্ত রকম চেষ্টা চলছে। ওরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র পালিয়েছে। তবে তারা শীঘ্রই ধরা পড়বে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন