দুই জেলায় পাঁচ রুটে বাস বন্ধ, দুর্ভোগ

দিনের প্রথম বাস ছাড়তে দেরি, অবরোধ

ভোরের প্রথম বাস এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে, এই অভিযোগে সোমবার সকালে প্রায় দেড় ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ হল হাওড়ার জয়পুরের ঝিকিরায়। এর জেরে, তিনটি রুটের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। লোকসান থেকে বাঁচতে বাস-মালিক ও কর্মীরাই চক্রান্ত করে ওই অবরোধ করিয়েছেন, এই অভিযোগে আবার ওই তিনটি রুটের অটো এবং ট্রেকার চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়পুর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪৩
Share:

বাস বন্ধ থাকায় এমন ঝুঁকি নিয়েই চলছে যাতায়াত। জয়পুরে।—নিজস্ব চিত্র।

ভোরের প্রথম বাস এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে, এই অভিযোগে সোমবার সকালে প্রায় দেড় ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ হল হাওড়ার জয়পুরের ঝিকিরায়। এর জেরে, তিনটি রুটের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। লোকসান থেকে বাঁচতে বাস-মালিক ও কর্মীরাই চক্রান্ত করে ওই অবরোধ করিয়েছেন, এই অভিযোগে আবার ওই তিনটি রুটের অটো এবং ট্রেকার চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। বিপাকে পড়েন কয়েক হাজার যাত্রী।

Advertisement

যে তিনটি রুটে এ দিন বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, তার মধ্যে রয়েছে মুচিঘাটা-করুণাময়ী, ঝিকিরা-হাওড়া এবং জয়পুর-বাগনান। এর মধ্যে প্রথম দু’টি রুটের বাস ঝিকিরা বাসস্ট্যান্ডের সামনে দিয়ে যাতায়াত করে। ঝিকিরা বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়া ঝিকিরা-হাওড়া রুটের প্রথম বাসটি গত শুক্রবার থেকে ভোর চারটের পরিবর্তে পাঁচটার সময় ছাড়ছে। এ দিন যথারীতি ওই রুটের প্রথম বাসটি ভোরে স্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে কিছুটা এগোতেই কয়েক জন যুবক লাঠি, বাঁশ ফেলে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন।

অবরোধকারীদের অভিযোগ, ভোর চারটের সময়ে বাস ছাড়লে তাঁরা নির্দিষ্ট সময়ে কাজে যোগ দিতে পারেন বা গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। কিন্তু এক ঘণ্টা দেরিতে বাস ছাড়ায় তাঁরা সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন না। এ নিয়ে বাস মালিক সংগঠনকে একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না।

Advertisement

অবরোধ চলে প্রায় দেড় ঘণ্টা। এর মধ্যেই ওই তিনটি রুটে চলা বিভিন্ন অটো এবং ট্রেকারও যাত্রী পরিবহণ বন্ধ করে দেয়। ওই দুই যান চালকদের অভিযোগ, বাসে যাত্রী কম হওয়ার কারণে বাসকর্মীরা রাগে ফুঁসছিলেন। সুযোগ পেয়ে তাঁদের লোকসান করাতে বাস-চালকেরা এ দিন অবরোধ করিয়ে ট্রেকার ও অটো চলাচলও বন্ধ করিয়ে দেন।

অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে তিনটি রুটের বাস-মালিক সংগঠন, ‘ঝিকিরা হাওড়া বাস সিন্ডিকেট’। অবরোধের জেরে ওই সংগঠন হাওড়া জেলার পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনার দ্বারস্থ হয়। অকারণে অবরোধ করে তাদের লোকসান করিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ দায়ের করেন থানায়।

পুলিশ সুপার জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। গণ পরিবহণ ব্যবস্থা যাতে বাধাপ্রাপ্ত না হয়, তা দেখা হচ্ছে।

‘ঝিকিরা হাওড়া বাস সিন্ডিকেট’-এর যুগ্ম সম্পাদক দেবাশিস পালুই বলেন, “যে ভাবে ডিজেলের দাম বাড়ছে এবং অটো-ট্রেকারে যাত্রী চলে যাচ্ছে, তাতে অবিলম্বে যাত্রিভাড়া না বাড়ালে আমাদের পোষাবে না। কিন্তু ভাড়াও বাড়ানো হচ্ছে না। ভোরের প্রথম বাসেও যাত্রী হচ্ছে না। তাই লোকসান এড়াতে এক ঘণ্টা দেরিতে বাস ছাড়ছি। অকারণে অবরোধ করা হয়েছে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝিকিরা-কলাতলা রুটের এক ট্রেকার-চালক বলেন, “ভোরে বাস ছাড়ার আগেই আমাদের ট্রেকার রাস্তায় নামে। যাত্রীরা আমাদের গাড়িতে উঠলে কী করতে পারি। চক্রান্ত করে আমাদের কাজে বাধা দেওয়া হল।”

প্রসঙ্গত, মুচিঘাটা-করুণাময়ী রুটে ৮টি, জয়পুর-বাগনান রুটে ৪টি এবং ঝিকিরা-হাওড়া রুটে মোট ২৩টি বাস চলাচল করে। অবশ্য বাস চলাচল শুরুর আগেই রাস্তায় নেমে পড়ে অটো এবং ট্রেকার। কিন্তু এ দিন গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা বাধ্য হয়ে মোটরভ্যান বা ভাড়াগাড়ির দ্বারস্থ হন। অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। অনেককে বেশি ভাড়াও গুনতে হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন