কলেজে বার্ষিক উত্সব দেখতে এসে দলেরই ছাত্রনেতা এবং তাঁর দলবলের হাতে মার খেলেন এক টিএমসিপি সমর্থক। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজে। প্রহৃত বিশ্বজিত্ সাঁতরাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন।
পুলিশ ও কলেজ সূত্রের খবর, তারকেশ্বর ডিগ্রি কলেজে এ দিন বার্ষিক উত্সব চলছিল। দুপুরে কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বিশ্বজিত সাঁতরা অনুষ্ঠান দাড়িয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সভাপতি রাহুল মুখোপাধ্যায় এবং তার সঙ্গীরা বিশ্বজিতকে বেধড়ক মারধর অভিযোগ। ঘটনাস্থলের সামনে থাকা পুলিশকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে কলেজের বাইরে বের করে দেন। ঘটনার জেরে হকচকিয়ে যান অন্য পড়ুয়ারা। পরে প্রহৃত ছাত্রকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তৃণমূলের অন্দরের খবর, বিশ্বজিত্ দলের পুরপ্রধান স্বপন সামন্তের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রাহুল উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডুর ঘনিষ্ঠ। রাহুলের বিরুদ্ধে থানায় মারধরের অভিযোগ জানিয়েছেন প্রহৃত ছাত্র।
বিশ্বজিত সাঁতরা বলেন, ‘‘কলেজে দাঁড়িয়েছিলাম। ওদের অনুষ্ঠান কেন দেখতে এসেছি, এই কথা বলে রাহুল আর ওর দলবল মারতে শুরু করে দেয়। পুলিশকর্মীরা আমাকে বাঁচান।” রাহুল অবশ্য অভিযোগ মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘একটি ছেলে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কটুক্তি করায় স্বেচ্ছাসেবকরা তাকে কলেজ থেকে বার করে দেয়। এর বেশি কিছু হয়নি।” আর অধ্যক্ষ অমল হাটির বক্তব্য, “সারাদিন কলেজে ছিলাম। কোনও রকম অশান্তির খবর কানে আসেনি।”
এ দিকে, বার্ষিক অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্র নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়ায়। পুরপ্রধান স্বপনবাবু কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। কিছু কার্ডে অতিথি তালিকায় তাঁর নাম ছাপা রয়েছে। কিন্তু বহু কার্ডে তাঁর নাম উধাও। এ নিয়ে স্বপনবাবু নিজে কিছু না বললেও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ক্ষোভ, ইচ্ছাকৃত ভাবেই এমনটা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ছাত্র পরিষদের সভাপতি রাহুলের বক্তব্য, “নিমন্ত্রণ পত্রে স্থানীয় বিধায়ক থেকে শুরু করে পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান সবারই নাম ছিল। কেউ যদি আলাদাভাবে নিমন্ত্রণপত্র ছাপিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, আমাদের কিছু করার নেই।” অধ্যক্ষের মন্তব্য, “নিমন্ত্রণপত্র নিয়ে আমার কিছু জানা নেই।’’