পুজোয় রাস্তা থেকে ইমারতির জিনিস সরানোর নির্দেশ পুলিশের

বিক্রির জন্য রাস্তার ধারে ফুটপাথে ফেলে রাখা হয়েছিল বাঁশ। এক মোটরবাইক আরোহীর বুকে লাগে বাঁশের ডগা। বুক এফোঁড়-এফোড় হয়ে যায় তাঁর। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। ঘটনাটি কয়েক সপ্তাহ আগের উলুবেড়িয়ার ললিতাগড়ি গ্রামের। রাস্তার ধারে ফুটপাথে ফেলে রাখা হয়েছিল বালি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইট বোঝাই ট্রাক ছুটে আসতে থাকে ফুটপাথের দিকে। এক সাইকেল আরোহী আটকে পড়েন বালির স্তুপে। ট্রাকটি এসে ধাক্কা মারে তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫৯
Share:

বিক্রির জন্য রাস্তার ধারে ফুটপাথে ফেলে রাখা হয়েছিল বাঁশ। এক মোটরবাইক আরোহীর বুকে লাগে বাঁশের ডগা। বুক এফোঁড়-এফোড় হয়ে যায় তাঁর। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। ঘটনাটি কয়েক সপ্তাহ আগের উলুবেড়িয়ার ললিতাগড়ি গ্রামের। রাস্তার ধারে ফুটপাথে ফেলে রাখা হয়েছিল বালি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইট বোঝাই ট্রাক ছুটে আসতে থাকে ফুটপাথের দিকে। এক সাইকেল আরোহী আটকে পড়েন বালির স্তুপে। ট্রাকটি এসে ধাক্কা মারে তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। ঘটনাটি উলুবেড়িয়ার মৌবেসিয়া গ্রামের। একই ঘটনা ঘটে উলুবেড়িয়ার রঘুদেবপুর গ্রামে। মুম্বই রোডের ধারে ফেলে রাখা বালির স্তুপ থাকায় তাঁর দিকে ধেয়ে আসা লরির সামনে থেকে ফুটপাথে সরে যেতে পারেননি এক সাইকেল আরোহী। লরির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ রাস্তার ধারে এ সব জিনিস সরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। হেলদোল দেখা যায়নি ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। কিন্তু পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরোনো মানুষজন যাতে সমস্যায় না পড়েন সে জন্য এ বার তত্‌পর হয়েছে পুলিশ।

Advertisement

সম্প্রতি হাওড়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তাদের মধ্যে উলুবেড়িয়া রবীন্দ্রভবনে এক উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হয়। তাতেই সিদ্ধান্ত হয়েছে রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্য ফেলে রেখে ব্যবসা করা যাবে না। এই কাজ যাঁরা করছেন সেই সব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাগনান-মানকুর, বাগনান-বাকসি, বাগনান-শ্যামপুর, উলুবেড়িয়া-শ্যামপুর, বাগনানের মুরালিবাড় থেকে লাইব্রেরি মোড় পযর্ন্ত ওয়ান ওয়ে রাস্তা, বীরশিবপুর-বোয়ালিয়া, উলুবেড়িয়া-শ্যামপুর প্রভৃতি রাস্তার ধারে ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসা গড়ে উঠেছে। অধিকাংশ ব্যবসায়ীর ইমারতির জিনিস রাখার কোনও জায়গা নেই। ফলে তাঁরা রাস্তার ধারে ফেলে রাখেন বালি, ইট, পাথরকুচি। ফলে শুধু যে দুঘর্টনা এবং প্রাণহানি ঘটে তা নয়, ওইসব রাস্তায় যানজটে নাজেহাস হত হয় পথচারীদের।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা বহুবার পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এ সব বন্ধ করার জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। ললিতাগড়িতে বাঁশের আঘাতে এক মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পরে প্রশাসন-পুলিশ নড়েচড়ে বসে। জেলা প্রশাসন থেকে পুলিশকে বলা হয় পুজোর আগেই ফুটপাথকে ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ীদের কবল থেকে মুক্ত করতে হবে।

ঠিক হয়েছেএই সব ব্যবসায়ীদের প্রথমে নিজে থেকে ফুটপাথ থেকে ইট, বালি, পাথরকুচি সরিয়ে নিতে বলা হবে। তাঁরা তা না করলে পুলিশ অভিযানে নামবে। ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা গ্রামীণ পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, ইতিমধ্যেই পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। এর পরে পুলিশ সরেজমিন পরিদর্শনে নামবে। ব্যবসায়ীরা রাস্তার ধারে জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলেছেন কি না তা তাঁরা দেখবেন। তারপরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন