পঞ্চায়েতে লুঠ, পালানোর সময় গুলিতে জখম পাহারাদার

লুঠপাট চালাতে এসে রাত পাহারাদারদের মুখোমুখি পড়ে গিয়ে গুলি ছুড়ে এক জনকে জখম করে পালাল দুষ্কৃতীরা। তার আগে স্থানীয় পঞ্চায়েত ভবনে ঢুকে টাকা লুঠ করে দুষ্কৃতী দলটি। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির ধনেখালিতে। জখম ব্যক্তি কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সন্ধ্যা পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধনেখালি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:০৯
Share:

লুঠপাট চালাতে এসে রাত পাহারাদারদের মুখোমুখি পড়ে গিয়ে গুলি ছুড়ে এক জনকে জখম করে পালাল দুষ্কৃতীরা। তার আগে স্থানীয় পঞ্চায়েত ভবনে ঢুকে টাকা লুঠ করে দুষ্কৃতী দলটি। বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির ধনেখালিতে। জখম ব্যক্তি কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সন্ধ্যা পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসু বলেন, “নির্দিষ্ট মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তাদের চেহারার বর্ণনা বিভিন্ন থানায় পাঠানো হয়েছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত আড়াইটে নাগাদ ১০-১২ জনের দুষ্কৃতী দলটি একটি গাড়িতে চেপে প্রথমে মাদ্রা পঞ্চায়েতে হানা দেয়। পঞ্চায়েত ভবনের কোলাপসিবল গেট এবং দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। অভিযোগ, সেখানকার ৪টি আলমারি ভেঙে নগদ কয়েক হাজার টাকা এবং একটি ডিজিটাল ক্যামেরা হাতিয়ে নেয়। পঞ্চায়েত ভবনে ‘কাজ সেরে’ বেরিয়ে দুষ্কৃতীরা তালসারি বাজারের দিকে যায়।

Advertisement

সেই সময় ওই বাজারে পাহারা দিচ্ছিলেন স্থানীয় আরজি পার্টির ছয় সদস্য এবং ধনেখালি থানার ৪ জন সিভিক স্বেচ্ছ্বাসেবক। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘোরাঘুরির পরে তাঁরা বসে গল্প করছিলেন। তখন গাড়ি থেকে নেমে বেশ কয়েক জনকে বাজারের দিকে আসতে দেখে দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। সিভিক স্বেচ্ছ্বাসেবকের কর্মীরা এবং মুকুল চক্রবর্তী নামে এক রাত পাহারাদার লাঠি হাতে তাদের দিকে এগিয়ে যান। পিছনে অন্যরা। মুকুলবাবু তাদের পরিচয় জানতে চান। শচীন কুমার নামে এক রাত পাহারাদার বলেন, “দুষ্কৃতীরা বলে আমরা কোথা থেকে আসছি তাতে তোদের দরকার কি? এই বলেই চারটি গুলি ছোড়ে।”

পুলিশ জানায়, একটি গুলি মুকুলবাবুর বুকে লাগে। তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বোমা ছোড়ার হুমকি দিয়ে গাড়ি চড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। শচীনবাবুরা প্রাণপনে বাঁশি বাজাতে শুরু করেন। ধনেখালি থানায় খবর দেওয়া হয়। তাঁদের চেঁচামেচিতে গ্রামবাসীরা ঘুম ভেঙে বেরিয়ে আসেন। আসে পুলিশ। দুষ্কৃতীদের অবশ্য ধরা যায়নি। গুলিবিদ্ধ মুকুলবাবুকে ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁকে সেখান থেকে কলকাতা মেডিক্যাল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার করে দেহ থেকে গুলি বের করা হয়। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

এ দিকে, সকাল হতেই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ে। এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। মাদ্রা পঞ্চায়েতের কর্মী মিঠু মুখোপাধ্যায় বলেন, “রোজকার মতো আজও (বুধবার) সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ পঞ্চায়েতের তালা খুলতে যাই। গিয়ে দেখি গেটের তালা ভাঙা। ভিতরে আলমারির দরজা খোলা। ফাইলপত্র লণ্ডভণ্ড।” মিঠুবাবুর কাছে খবর পেয়ে পঞ্চায়েতের কর্তাব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে আসেন। ধনেখালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় পঞ্চায়েতের তরফে। রাত পাহারাদারদের তরফেও থানায় নির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়। মুকুলবাবুর দাদা দেবকুমার চক্রবর্তী বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরেই ৪০ টাকার বিনিময়ে ভাই রাত পাহারা দিত। কিন্তু এমনটা কোনও দিন হয়নি।”

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কার্যত কোনও ধরণের প্রশিক্ষণ ছাড়াই সিভিক স্বেচ্ছ্বাসেবকদের যে কোনও কাজে নামানো হয়। ফলে, কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়লে মোকাবিলার ধরন তাঁদের জানা নেই। এ ক্ষেত্রে সেই কায়দা জানা থাকলে হয়তো ওই সিভিক স্বেচ্ছ্বাসেবকরা দুষ্কৃতীদের মধ্যে কাউকে ধরতে পারতেন।

বধূ নির্যাতনে ধৃত। নিজেকে সরকারি অফিসার হিসেবে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে এক তরুণীকে বিয়ে এবং তাঁকে নির্যাতনের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল হুগলির গোঘাট থানার পুলিশ। বুধবার বাঁকুড়ার ইন্দাসের পুসকুরি গ্রাম থেকে সাগর মাঝি নামে ওই যুবককে ধরা হয়। অভিযোগ, এর আগেও দু’টি বিয়ে করেছিল সাগর। বিষয়টি বেমালুম চেপে গিয়ে নিজেকে পূর্ত দফতরের অফিসার পরিচয় দিয়ে মাস তিনেক আগে গোঘাটের কানপুর গ্রামের এক তরুণীকে বিয়ে করে সে। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে ওই তরুণী জানান, ওই সব ‘কীর্তি’ জেনে ফেলায় স্বামী তাঁর উপর নির্যাতন শুরু করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন