তৃণমূল পরিচালিত আরামবাগের গৌরহাটি ২ পঞ্চায়েত প্রধান ব্লক অফিসে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার মিনিট পঁয়তাল্লিশের মধ্যেই দলের নেতারা এসে তা তুলে নিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনার পরে পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের রীতা দলুইয়ের পদত্যাগপত্র দাখিল আটকানো হলেও সমস্যা মেটেনি। প্রধান শুক্রবার থেকে অফিস আসাই বন্ধ করে দিয়েছেন। এমনকী মোবাইল ফোনও বন্ধ করে নেতাদের থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন তিনি।
রিতাদেবী তাঁর দাখিল করা পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছিলেন, ছেলেমেয়েকে সময় দিতে পারছেন না বলেই তিনি পদ ছাড়তে চান। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একটি অংশের হেনস্থায় অপদস্থ হয়েই প্রধান পদত্যাগে অনড় বলে কিছু পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ। আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল দলনেতা তথা কৃষি ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ বাণেশ্বর চিনা বলেন, “দলেরই কয়েক জনের অসম্মানজনক ব্যবহার এবং কটূ কথায় তিনি পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। বিষয়টা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
ঠিক কী কারণে প্রধান পদত্যাগ করতে চাইছেন?
প্রধানের স্বামী, স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিখিল দলুইয়ের ফোনে ধরা হলে রিতাদেবী বলেন, “এক দিকে পঞ্চায়েতের কাজের চাপ, অন্য দিকে বাড়িতে তিন বছরের ছেলে। আমি নিজেও অসুস্থ। তাই দায়িত্ব থেকে অব্যহতি চেয়েছি।” অন্য কোনও চাপ ছিল? প্রধানের জবাব, “যা বলার নেতাদের বলেছি।” পঞ্চায়েত সদস্যদের একটা অংশের অভিযোগ, প্রধানকে না জানিয়েই পঞ্চায়েতের দলনেতা সুনীল সামন্ত এবং উপপ্রধান অনন্ত ভট্টাচার্য এলাকায় বিভিন্ন কাজ করিয়ে তাঁকে দিয়ে সই করিয়ে নিচ্ছিলেন। সম্প্রতি তিনি প্রতিবাদ করায় সুনীলবাবুর কয়েক জন অনুগামী কটূ কথা বলেন বলে অভিযোগ। সুনীলবাবু অবশ্য দাবি করেন, “কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।” উপপ্রধান বলেন, “এ নিয়ে মঙ্গলবার দলের বৈঠক আছে। কোনও ভুল বোঝাবুঝি থাকলে তা মিটে যাবে।”