শ্রমিক অসন্তোষে শনিবার ফের কাজ বন্ধ হল ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস জুটমিলে।
কাজ কম ও তিন শিফটের বদলে দু’শিফটে কাজের প্রতিবাদে লাগাতার শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে গত ২৫ অক্টোবর মিল কর্তৃপক্ষ ৫৪ জন শ্রমিককে বার করে দেন। প্রতিবাদে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ভাঙচুরের জেরে ২৬শে অক্টোবর মিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝুলিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। বেকার হয়ে পড়েন প্রায় চার হাজার শ্রমিক।
শ্রমিক সংগঠন এবং শ্রমিকদের দাবি, ৫ ডিসেম্বর ত্রিপাক্ষিক (মিল কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক সংগঠন ও প্রশাসন) বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ওই ৫৪ জন শ্রমিকের মধ্যে ৫২ জনকে কাজে ফিরিয়ে নিয়ে ৭ ডিসেম্বর থেকে মিল চালু করবেন কর্তৃপক্ষ। আলোচনার মাধ্যমে বাকি দু’জনকে ২০ ডিসেম্বর কাজে নেওয়া হবে। সেইমতো এ দিন সকালে ওই দুই শ্রমিকসতীশ সিংহ এবং শেখ ইসলামউদ্দিন কাজে যোগ দিতে যান। কিন্তু মিল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, তাঁদের কাজে নেওয়া যাবে না।
এ কথা জানাজানি হতেই মিলের সমস্ত শ্রমিক কাজ বন্ধ করে মিলের বাইরে বেরিয়ে আসেন। ব্যাহত হয় উৎপাদন। সতীশ সিংহ এবং শেখ ইসলামউদ্দিনের বক্তব্য, “কর্তৃপক্ষ কথার খেলাপ করে আমাদের কাজে না নেওয়ার প্রতিবাদে অন্য শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দেন।” পরে মিল কর্তৃপক্ষ এ দিন কাজ বন্ধের নোটিস দিয়ে মিল বন্ধ করে দেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, ‘‘মিল কর্তৃপক্ষ স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করতে চাইছেন। তাঁরা যা করবেন, সেটাই মানতে হবে। না হলে কাজ বন্ধ করে গেটের বাইরে বার করে দেবেন! প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও বাকি দু’জনকে কাজে ফেরত নেওয়া হল না কেন? কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকেও তোয়াক্কা করছেন না।’’ জেলার সিটু নেতা সুনীল সরকার এবং আইএনটিটিইউসি নেতা মনোজ উপাধ্যায় বলেন, “আমরাও বুঝতে পারছি না, কেন মিল কর্তৃপক্ষ কথা রাখলেন না। ওঁদের সঙ্গে ফের কথা বলব।”
মিল কর্তৃপক্ষের তরফে হৃদয়নারায়ণ চৌবের দাবি, “ওই দুই শ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওঁদের কাজে ফেরত নেওয়ায় সমস্যা রয়েছে। আমরা অশান্তি চাই না।”
চন্দননগরের ডেপুটি শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আমরা মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, যাতে সমস্যার সমাধান করে সুষ্ঠু ভাবে মিল চালু রাখা যায়।’’ শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্তের আশ্বাস, আগামী ২৬শে ডিসেম্বর ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডেকে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।