কলকাতায় বিজেপি-র সভায় যাওয়া চলবে না, তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান এমনই ফতোয়া জারি করেছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু তা সত্ত্বেও সভায় যাওয়ায় তাঁর জমিতে সেচ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক চাষি।
ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাটের হাজিপুর পঞ্চায়েতের দেবখন্ড গ্রামে। বংশী চানক নামে বিজেপি কর্মী ওই চাষি ৭ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। তিনি বলেন, “প্রধানের নিষেধ না মেনে গত ৩০ নভেম্বর কলকাতায় দলের সভায় গিয়েছিলাম। তারপরই গত ৯ ডিসেম্বর থেকে পঞ্চায়েতের মিনি ডিপটিউবওয়েল থেকে আমার জমিতে জল সেচ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান।” অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান মানিক রায় বলেন, “বংশীবাবু কাল্পনিক অভিযোগ না করে সেচ নিয়ে তাঁর অসুবিধা থাকলে আমাকে জানাতে পারতেন।” তাঁর বক্তব্য, নতুন ওই মিনি ডিপটিউবওয়েলটি চালানোর লোক এখনও নিয়োগ হয়নি। চাষিরাই পালা করে চালাচ্ছেন। কখন কে চালাচ্ছেন তা খোঁজ নিয়ে ঠিকমতো সেচ দিলেই তো হল। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি নিজের ফসলেরই ক্ষতি করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবখন্ড গ্রামের আধিকাংশ চাষিরই জমিতে আলু বসানো হয়ে গিয়েছে নভেম্বর মাসের ২৫ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে। বংশীবাবুর অভিযোগ, “গত ৯ ডিসেম্বর জমিতে প্রথমবার সেচ দিতে গেলে প্রধান এসে বলেন, ‘আমি সভায় যাওয়ার জন্য পঞ্চায়েতের মিনি ডিপটিউবওয়েল থেকে কোনও সেচ পাব না। বিষয়টা ব্লক প্রশাসনেও জানাই, কিন্তু কিছু সুরাহা হয়নি।” গোঘাট ২-এর বিডিও শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে জল না পাওয়ায় বেশ কিছু আলু গাছ শুকিয়ে গিয়েছে এবং বেশ কিছু বীজ থেকে এখনও গাছই বের হয়নি বলে অভিযোগ বংশীবাবুর। বুধবার বিজেপির রাজ্য কিষান মঞ্চের সদস্য তথা আরামবাগ কৃষক সংগঠনের পর্যবেক্ষক অশোক সাঁতরা সহ একটি দল সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শনে আসেন। তাঁরা বিডিওর সঙ্গেও দেখা করে সেচের দাবি জানিয়েছেন।
অশোকবাবু, “বলেন কলকাতায় অমিত শাহর সভায় যাওয়ার অপরাধে ওই চাষির আলু জমিতে প্রায় এক মাস ধরে সেচ নেই। এরপর সেচ দিলেও ফসল হবে কি না সন্দেহ। প্রশাসন দু’দিনের মধ্যে ওই চাষির জমিতে সেচের ব্যবস্থা না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”