নতুন বছরের শুরুতেই ফের খুন এবং ছিনতাই। দুষ্কৃতীদের উপদ্রব কমছে না ভদ্রেশ্বর থানা এলাকায়।
গৌরহাটি এলাকায় মিলল অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের গুলিবিদ্ধ দেহ। অন্য দিকে, অ্যাঙ্গাস এলাকায় এক ট্রাক-চালক ও তাঁর ছেলেকে মারধর করে টাকা ছিনতাই করল দুষ্কৃতীরা। কয়েক মাস ধরেই ওই থানা এলাকায় দুষ্কৃতী উপদ্রব বেড়েছে। খুন, বোমা বাঁধতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের জখম হওয়া— কিছুই বাদ নেই। সেই তালিকায় এ বার যুক্ত হল ওই দু’টি ঘটনাও।
গৌরহাটি এলাকায় বন্ধ যক্ষ্মা হাসপাতালের একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে বছর ত্রিশের অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবকের দেহটি মেলে বৃহস্পতিবার সকালে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদেহের গলায় গুলির দাগ রয়েছে। তাঁর পরনে ছিল জিন্স এবং কোট। স্থানীয় লোকজনই দেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশের অনুমান, অন্যত্র খুন করে দেহটি ওই ঘরে ফেলে রেখে যায় দুষ্কৃতীরা।
অন্য দিকে, বুধবার রাতে অ্যাঙ্গাস এলাকায় যে ট্রাক-চালককে মারধর করে টাকা ছিনতাই করে দুষ্কৃতীরা, সেই মহম্মদ করিমুদ্দিন ওই এলাকারই বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ২টো নাগাদ নিজের আনাজ ভর্তি ট্রাক নিয়ে হাওড়ার ধুলাগড়িতে যাওয়ার পথে অ্যাঙ্গাস মোড়ে ট্রাক দাঁড় করিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন করিমুদ্দিন। কেবিনের বাঁ দিকে বসে ছিলেন তাঁর ছেলে মহম্মদ শামিম। সেই সময়ে এক দল যুবক করিমুদ্দিনের ট্রাক আটকে টাকা চায়। করিমুদ্দিন আপত্তি জানানোয় ওই যুবকেরা শামিমকে মারধর শুরু করে। করিমুদ্দিন বাধা দিতে গিয়ে প্রহৃত হন। তাঁকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং তাঁর কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকা ওই যুবকেরা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। শামিমের চিৎকারে লোকজন চলে এলে হামলাকারীরা পালায়। করিমুদ্দিনকে চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
করিমুদ্দিন বলেন, ‘‘মালদহ থেকে হাওড়া যাওয়ার পথে ভেবেছিলাম বাড়ির লোকদের সঙ্গে দেখা করে যাই। কিন্তু বাড়ির কাছেই যে আক্রান্ত হব ভাবিনি। ছেলে চিৎকার না করলে হয়তো আমাকে প্রাণে মেরে দিত।”
এই দুই ঘটনায় ফের পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই শহরের বহু বাসিন্দা। তাঁরা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, অ্যাঙ্গাস, চাঁপদানির মতো কয়েকটি এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপ বেড়েই চলেছে। পুলিশের হুঁশ নেই। ইতিমধ্যেই চাঁপদানির এক ব্যবসায়ী দাবিমতো তোলা না দেওয়ায় দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় জখম হন। চাঁপদানিরই একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার একটি বাড়ির পিছনে বোমা বাঁধার সময় বিস্ফোরণে দু’জনজখম হয়েছিল। তার পরে চাঁপদানিতেই দোকানে খুন হন এক ব্যবসায়ী। দুষ্কৃতীদের কবলে পড়ে মোটরবাইক থেকে শুরু করে নানা মূল্যবান জিনিস খোয়ানোর অভিযোগ রয়েছে অনেক।
তাই নতুন দু’টি ঘটনায় সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, পুলিশ প্রশাসন কী শুধুই নীরব দর্শক? কেন কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে না? জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, আগের ঘটনাগুলির তদন্ত চলছে। ভদ্রেশ্বরে রাতে পুলিশি টহল বাড়ানো হচ্ছে।