বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার এক এজেন্টের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় সিঙ্গুরের দেওয়ানভেড়ির বাসিন্দা রাজীবকুমার দাস (৪২) নামে ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ মেলে রতনপুরের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারের একটি কুল গাছ থেকে। পুলিশের অনুমান, আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে না পেরে তিনি মানসিক চাপে আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে, রাজীববাবুর বাড়ির লোকের সন্দেহ, মৃত্যুর পিছনে অন্য কারণ থাকতে পারে।
এসডিপিও (চন্দননগর) দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘মৃত যুবক অবসাদে ভুগছিলেন। তাঁর কাছ থেকে আমানতকারীরা ২০-২৫ লক্ষ টাকা পেতেন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে।’’
পুলিশ ও মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরে ‘এমপিএস’ নামে একটি বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্টের কাজ করতেন রাজীব। সারদা-কাণ্ড সামনে আসার পরে ওই লগ্নি সংস্থা বন্ধ হয়ে যায়। আমানতকারীরা টাকার জন্য তাঁর কাছে দরবার শুরু করেন। তা নিয়ে রাজীব মানসিক চাপে ছিলেন। তিন মাস আগে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার ছুটি থাকায় দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তিনি মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। বলে যান কামারকুণ্ডুর ভোলা এলাকায় যাচ্ছেন। সিঙ্গুর স্টেশনের কাছে গ্যারাজে মোটরবাইকটি রাখেন। এর পরে অবশ্য তাঁর খোঁজ মেলেনি।
শুক্রবার সিঙ্গুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার তোড়জোড় করেছিলেন রাজীবের পরিবারের লোকজন। তখনই রাজীবের মৃত্যুর খবর পান তাঁরা। পুলিশ গিয়ে দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায়। এ দিন ওই হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে মৃতের আত্মীয় প্রশান্ত পাল বলেন, ‘‘আমানতকারীরা জামাইবাবুকে টাকার জন্য চাপ দিত। সেই কারণে তিনি মানসিক ভাবে চাপে ছিলেন। তবে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন, না কি এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে পুলিশ তা তদন্ত করে দেখুক।”
প্রশান্তবাবুর দাবি, রাজীবের একটি মোবাইল এবং মানিব্যাগ পাওয়া যায়নি।” শ্রীকান্ত পাল নামে মৃতের আর এক আত্মীয় বলেন, ‘‘এর আগে অনেক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। জামাইবাবু সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠেন। আমাদের মনে হয় না উনি আত্মঘাতী হতে পারেন, পুলিশ বিষয়টি দেখুক।”