মাধ্যমিকে বাড়ল ছাত্রীর সংখ্যা

এ বারে হুগলি জেলায় মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ল। তবে, এ বারেও ছাত্রদের তুলনায় বেশি ছাত্রীই মাধ্যমিকে বসতে চলেছে। মূলত, গ্রামাঞ্চলে অষ্টম শ্রেণির পরে ছাত্রেরা পড়াশোনা ছেড়ে নানা কাজে জড়িয়ে পড়ার জন্যই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ।

Advertisement

প্রকাশ পাল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৯
Share:

এ বারে হুগলি জেলায় মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ল। তবে, এ বারেও ছাত্রদের তুলনায় বেশি ছাত্রীই মাধ্যমিকে বসতে চলেছে। মূলত, গ্রামাঞ্চলে অষ্টম শ্রেণির পরে ছাত্রেরা পড়াশোনা ছেড়ে নানা কাজে জড়িয়ে পড়ার জন্যই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ।

Advertisement

জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বার মোট পরীক্ষার্থীর (নিয়মিত, কমপার্টমেন্টাল-সহ) সংখ্যা ৬২,৮০১। এর মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থী ৫৩ হাজার ২৩৮ জন। তাদের মধ্যে ছাত্রী ২৮ হাজার ৩৫২ জন, ছাত্র ২৪ হাজার ৮৮৬ জন। অর্থাৎ, ছাত্রদের তুলনায় এই জেলায় ৩৪৬৬ জন বেশি ছাত্রী এ বার মাধ্যমিকে বসতে চলেছে। একই রকম ভাবে গত বছরও জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বেশি ছিল ছাত্রীর সংখ্যাই। গত বার নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪০,২৫৪। তার মধ্যে ১৯ হাজার ২ জন ছাত্র এবং ২১ হাজার ২৫২ জন ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিল। অর্থাৎ, ছাত্রীসংখ্যা ২২৫০ বেশি ছিল।

নালিকুল, ধনেখালি, জাঙ্গিপাড়ার মতো গ্রামীণ এলাকার বেশ কিছু স্কুলের শিক্ষকই জানান, অষ্টম শ্রেণির পরে স্কুলে ছাত্রের সংখ্যা কমছে। সংসারের প্রয়োজন মেটাতে অনেকেই পড়াশোনা ছেড়ে সোনা-রুপোর বা কাঠের কাজে যুক্ত হয়ে পড়ছে। কেউ কেউ ভিন্ রাজ্যেও পাড়ি দিচ্ছে। ফলে, কোথাও কোথাও মাধ্যমিকে ছাত্রের সংখ্যা কমছে। হরিপালের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সন্দীপ সিংহ বলেন, “অষ্টম শ্রেণির পরে ছাত্রদের অনেকেই স্কুলছুট হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরেই আমাদের স্কুলে মাধ্যমিকে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। এ বারেও আমাদের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশই মেয়ে।” ওই এলাকারই আর একটি স্কুলের শিক্ষক বলেন, “ছাত্রীদের স্কুলছুট রুখতে কন্যাশ্রী-সহ নানা সরকারি সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাত্রদের ক্ষেত্রেও তেমন কিছু করা হলে স্কুলছুটের হার কমবে।” প্রশাসনের দাবি, স্কুলছুটের হার কমাতে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ফলে, আর হাতেগোনা সাত দিন সময় রয়েছে। তাই পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ করতে স্কুল শিক্ষা দফতরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। ওই দফতরের আধিকারিকেরা জানান, ৪টি মহকুমায় মোট ৭১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রশাসনের তরফে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্র চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করা হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে থাকবে কড়া পুলিশি পাহারা। ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল ফোন নিয়ে কেন্দ্রে ঢোকার ব্যাপারে কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকছে। নকল করা ঠেকাতে শিক্ষকেরা পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে যেমন তৎপর থাকবেন, তেমনই বাইরে থেকে জানলা দিয়ে বা অন্য কোনও ভাবে পরীক্ষার্থীদের যাতে কেউ টুকলি সরবরাহ করতে না পারে, সে ব্যাপারে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। পরীক্ষার প্রথম দিন পরীক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থা দেখার জন্য অভিভাবকেরা পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন। দ্বিতীয় দিন থেকে তাঁদের প্রবেশাধিকার থাকবে না। পরীক্ষা চলাকালীন ২০০ মিটারের মধ্যে কোনও অভিভাবক থাকতে পারবেন না।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক শুক্লা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “পরীক্ষা যাতে নির্বিঘ্নে শেষ হয়, তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়মমতো পার্শ্বশিক্ষকেরা কোনও ভাবেই পরীক্ষাকেন্দ্রে ‘ইনভিজিলেটর’ হতে পারবেন না। যদি কোনও স্কুলে পর্যাপ্ত পূর্ণ সময়ের শিক্ষক না থাকে, তবে, প্রয়োজনে অন্য স্কুল থেকে শিক্ষকের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।”

জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে যেমন সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তেমনই প্রয়োজন মতো বিভিন্ন জায়গায় স্কুলের সামনে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন