মালিকানা নিয়ে চাপান-উতোর, অবহেলিত হাওড়ার বঙ্কিম পার্ক

এমনিতেই হাওড়ায় পার্ক কম, তার উপরে জমিজটে আটকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্কের উন্নয়ন। পার্কটি এখন বিয়েবাড়ি, লরি পার্কিং ও পুরসভার জঞ্জাল ফেলার গাড়ি রাখার জায়গা হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, ২০ কাঠা জমির উপরে তৈরি ঋষি বঙ্কিম পার্ক সংস্কারে উদ্যোগী হয়নি তৃণমূল শাসিত পুরসভা। আশির দশকে ঋষি বঙ্কিম পার্ক তৈরি হয়। মধ্য হাওড়ার পঞ্চাননতলা রোডে অবস্থিত এই পার্কটি বেদখল হয়ে গিয়েছিল স্থানীয় প্রোমোটার ও দুষ্কৃতীদের হাতে।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৩৫
Share:

পার্কেই হয়েছে মণ্ডপ। চলছে গাড়ি রাখাও। ছবি:দীপঙ্কর মজুমদার

এমনিতেই হাওড়ায় পার্ক কম, তার উপরে জমিজটে আটকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্কের উন্নয়ন। পার্কটি এখন বিয়েবাড়ি, লরি পার্কিং ও পুরসভার জঞ্জাল ফেলার গাড়ি রাখার জায়গা হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, ২০ কাঠা জমির উপরে তৈরি ঋষি বঙ্কিম পার্ক সংস্কারে উদ্যোগী হয়নি তৃণমূল শাসিত পুরসভা।

Advertisement

আশির দশকে ঋষি বঙ্কিম পার্ক তৈরি হয়। মধ্য হাওড়ার পঞ্চাননতলা রোডে অবস্থিত এই পার্কটি বেদখল হয়ে গিয়েছিল স্থানীয় প্রোমোটার ও দুষ্কৃতীদের হাতে। এলাকার মানুষ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে পার্কটিকে দখলমুক্ত করা হয়। ১৯৯৯-এ ভূমিসংস্কার দফতর পার্কের একাংশ সরকারি ভাবে হাওড়া পুরসভাকে হস্তান্তর করে। পুরসভার তৎকালীন বামবোর্ড পার্কের কিছুটা সংস্কার করে শিশুদের খেলার জায়গা ও আলোর ব্যবস্থা করে। হাওড়া উন্নয়ন সংস্থা (এইচআইটি) পার্কটিকে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ সবের পরেও ‘হাওড়া সিটিজেন ফোরাম’-এর উদ্যোগে বঙ্কিম মেলা করা ছাড়া প্রশাসন বা পুরসভা পার্কটির উন্নয়নে উদ্যোগী হয়নি। অভিযোগ, ক্ষমতায় এসেও বর্তমান বোর্ডও শুধু ত্রিফলা বসিয়ে কাজ সেরেছে।

Advertisement

এলাকার বাসিন্দা পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, “ওখানে জোরালো আলো বসিয়ে রাতে গাছে আশ্রয় নেওয়া পাখির দলকেও তাড়িয়েছে। পার্কে রাখা হচ্ছে পুরসভার জঞ্জাল ফেলার গাড়ি। বিয়ের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে।”

এলাকার বাসিন্দা ও পার্কের পাশেই তৈরি হওয়া একটি ক্লাবের সম্পাদক সৌমেন চক্রবর্তী বলেন, “পার্কটি সংস্কারে পুরসভাকে জানিয়েও ফল হয়নি। কিছু লোক নানা কাজে ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।”

হাওড়া সিটিজেন ফোরামের প্রচার কমিটির আহ্বায়ক নিশীথ সরকার জানান, পার্কের মালিকানা নিয়ে জটিলতা হচ্ছে। পুরসভার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। তিনি বলেন, “জমিটি পুরসভাকে হস্তান্তর করেছে জেলা ভূমি রাজস্ব দফতর। সেই কাগজ ও পুরসভার ডিমাণ্ড রেজিস্টার ফোরামের কাছে রয়েছে। চাইলে পুরসভাকে দেওয়া হবে।”

ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় থাকা পার্ক কেন সংস্কার হচ্ছে না? পুরসভা জানায়, জমির মালিকানা দাবি করে কয়েক জন পুরসভাকে চিঠি দিয়েছে। তাই পার্ক সংস্কার হচ্ছে না। পুরসভার পার্ক ও গার্ডেনের বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরা বলেন, “মালিকানার বিষয়টি আইনগত ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পার্কের যে অংশটি পুরসভার সেটি যাতে ব্যক্তি স্বার্থে যাতে ব্যবহার না হয় তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন