যাত্রা দেখে মাঝরাতে ফিরছিলেন মা-মেয়ে। হঠাৎই দু’টি সাইকেল পিছন থেকে এসে তাঁদের পেরিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে।
“আমি মাকে বলি, ‘ওরা দাঁড়িয়ে পড়েছে। তাড়াতাড়ি পা চালাও।’ প্রায় দৌড়াতে থাকি আমরা। কিন্তু সাইকেল ফেলে রেখে দু’জন ধাওয়া করে আমাদের ধরে ফেলে” বলছে অষ্টম শ্রেণিতে পড়া সেই কিশোরী, শুক্রবার রাতে হাওড়ার শ্যামপুরের অনন্তপুর গ্রামে যাকে বাঁচাতে গিয়ে গলায় কোপ খেয়েছেন তার মা।
“লোক দু’টো প্রথমেই আমার হাত ধরে টেনে মাঠের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তা দেখে মা চিৎকার শুরু করলে ওরা আমায় ছেড়ে মায়ের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাকে ঠেলে রাস্তার ধারে ফেলে দেয় ওরা। মা বারবার বলতে থাকে, ‘গায়ে যা গয়নাগাটি আছে, তোমরা নিয়ে নাও। টাকাপয়সাও নিয়ে নাও। আমাদের ছেড়ে দাও।’ বলতে-বলতেই এক জন ধারালো কিছু দিয়ে মায়ের গলায় কোপ মারে। মা লুটিয়ে পড়ে। আমি ছুটে মাকে ধরতে যেতেই লোক দু’টো সাইকেল চড়ে পালায়” এক নিঃশ্বাসে বলে থামে মেয়েটি।
গুরুতর জখম ওই বধূ এখন উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর স্বামী কলকাতায় রেশন ডিলারের দোকানে কাজ করেন। খবর পেয়ে তিনি ফিরে এসেছেন। শনিবার তিনি বলেন, “পুলিশ হাসপাতালে এবং আমাদের বাড়িতেও এসেছিল। আমার মেয়ে তাদের কাছে অভিযোগ জমা দিয়েছে।” গত মঙ্গলবার রাতেও যাত্রা দেখে ফেরার পথে শ্যামপুরেরই গুজারপুর মাঝিপাড়ার এক কিশোরী গণধর্ষিতা হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় দুই যুবককে পুলিশ প্রায় সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করলেও, অনন্তপুরের ঘটনায় রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।
দুই সাইকেল আরোহী মা-মেয়ের পিছু নিল কী করে?
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রের খবর, অনন্তপুর মিল গেটে রাতে যাত্রার আসর বসেছিল। আসর ভাঙার একটু আগে, রাত দেড়টা নাগাদ মা-মেয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েন। পাশেই নারকেলদহ গ্রামে বাড়ি। মাঝপথে হঠাৎই দুই যুবক তাঁদের পিছু নেয়। তারা দুষ্কর্মের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিল, না কি যাত্রার আসর থেকেই তাঁদের দিকে নজর রাখছিল, তা অবশ্য মা-মেয়ে বুঝে উঠতে পারেননি।
এ দিন সকালে হাসপাতালে এসে আহত বধূর সঙ্গে কথা বলেন জেলার পুলিশকর্তারা। শ্যামপুর থানার পুলিশ তাঁদের বাড়িতেও যায়। বিকেলে বাবার সঙ্গে থানায় গিয়ে কিশোরীটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
অভিযুক্ত তৃণমূল
একটি বেসরকারি বাসের চালক ও কন্ডাক্টরদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে। হাওড়া স্টেশন চত্বরের ঘটনা। মারধরে গুরুতর আহত হন কন্ডাক্টর। প্রতিবাদে শনিবার দিনভর ওই রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকে। বাস ঘোরানোর সময় আইএনটিটিইউসির কলকাতা বাসস্ট্যান্ড হকার্স ইউনিয়নের কার্যালয় ধাক্কা লেগে দেওয়ালে চিড় ধরে যায়। তখনই বেরিয়ে আসেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় সিংহ।