দলের নির্দেশ ছিল অনাস্থা আনা যাবে না। মিলেমিশে কাজ করতে হবে। কিন্তু বাদ সাধল বিধায়ক-সাংসদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর তারই জেরে রিষড়া পঞ্চায়েতে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনল তৃণমূল। সুযোগ বুঝে কংগ্রেসও সামিল হল তৃণমূলের সঙ্গে। দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার ঘটনায় ফের রিষড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
গত নির্বাচনে ওই পঞ্চায়েতে একক ভাবে জয়ী হয় তৃণমূল। ২৮টি আসনের মধ্যে তাদের দখলে রয়েছে ১৮টি। বামেদের হাতে ৮টি এবং কংগ্রেসের দখলে ২টি আসন রয়েছে। বুধবার উপপ্রধান বিরাজ মোল্লা-সহ তৃণমূলের ১৪ জন এবং কংগ্রেসের ২ জন সদস্য শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়ার বিডিওর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। অনাস্থার চিঠিতে তাঁরা অভিযোগ তুলেছেন, প্রধান সুমিতা বড়ুয়া স্বেচ্ছাচারিতার সঙ্গে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম পরিচালনা করেন। সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গহীত সিদ্ধান্ত পর্যন্ত কার্যকর করেন না। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অন্যদের পরামর্শ বা প্রস্তাবে কোনও গুরুত্ব দেন না। উপপ্রধান যথার্থ মর্যাদা পান না। ওই সদস্যদের আরও অভিযোগ, প্রধান অন্য সদস্যদের বিশ্বাস করেন না। তিনি তাঁর স্বামীর নির্দেশ মতো পঞ্চায়েত চালান। এ জন্য অন্য সদস্যরা যেমন অপমানিত হচ্ছেন, তেমনি সাধারণ মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর ফলে দলের ভাবমূর্তিও খারাপ হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। পঞ্চায়েতের সদস্য সুবোধচন্দ্র দাস বলেন, “প্রধান যে ভাবে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না।” বিডিও আশিক ইকবালের কাছে ওই সদস্যরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে সুমিতাদেবীকে প্রধান পদ থেকে সরানোর দাবি তোলেন।
দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে দলের লোকজনদের এমন ক্ষোভে বিব্রত তৃণমূল নেতৃত্ব। অনাস্থার পক্ষে থাকা তৃণমূল সদস্যরা বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের ঘনিষ্ঠ, দলের ব্লক সভাপতি সুব্রত রায়ের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, প্রধান সুমিতাদেবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী বলে পরিচিত। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে প্রধানের বক্তব্য, “ওঁরা কেন অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিলেন, ওঁরাই জানেন। আমি যা বলার দলকেই বলব। দল যা বলবে করব।”