সিপিএম-তৃণমূল দ্বন্দ্বে বেহাল ইকোপার্ক

রক্ষণাবেক্ষণার অভাবে জঙ্গলে ঢেকে যাচ্ছে ইকোপার্ক। আমতার সন্তোষপুরের এই ইকোপার্কটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় শিশুদের খেলার জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে এলাকায়। তা ছাড়া পার্কটি থেকে দিনের পর দিন চুরি হচ্ছে সৌন্দর্যের জিনিস এবং নানারকমের ফুলগাছের টব। তবু প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

মনিরুল ইসলাম

আমতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০১:১৭
Share:

রক্ষণাবেক্ষণার অভাবে জঙ্গলে ঢেকে যাচ্ছে ইকোপার্ক। আমতার সন্তোষপুরের এই ইকোপার্কটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় শিশুদের খেলার জায়গার অভাব দেখা দিয়েছে এলাকায়। তা ছাড়া পার্কটি থেকে দিনের পর দিন চুরি হচ্ছে সৌন্দর্যের জিনিস এবং নানারকমের ফুলগাছের টব। তবু প্রশাসনের কোনও হুঁশ নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

অথচ এই পাকর্টির বেহাল অবস্থা নিয়ে সিপিএম ও তৃণমূল একে অপরকে দোষারোপ করছে। এবিষয়ে সিপিএমের সন্তোষ অধিকারি বলেন, “পার্কটি তৈরি হওয়ার পর তা দেখভালের জন্য যথাযথ ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর দেখাশোনার অভাবে নষ্ট হয়ে গেল।” তৃণমূলের আমতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুখদেব মণ্ডল বলেন, “সিপিএম থেকে পার্কটি তৈরি করেছিল ঠিকই কিন্তু তা রক্ষণাবেক্ষণা করেনি। তাই পার্কটির এমন অবস্থা হয়েছে। আমরা ৩৮ লক্ষ টাকা দিয়ে পার্কটি সংস্কারের পরিকল্পনা করছি।”

এই পার্কটি বাম আমলে ২০০৮ সালে হাওড়া জেলা পরিষদ তৈরি করেছিল। কিন্তু পার্কটির দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল আমতা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির উপর। শিশুদের জন্য একটি খেলার জায়গা তৈরি হয়েছিল বলে জানালেন বাসিন্দারা। তাছাড়া শিশুদের বিনোদনের জন্য এখানে দোলনা, স্লিপ ও নানারকম খেলার জিনিসও রাখা হয়েছিল। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে পার্কটি সাজানো হয়েছিল বলে দাবি এলাকাবাসীর। কিন্তু সেসব এখন অতীত। এখন পার্কটির ভগ্নদশা। পার্কের প্রায় অনেক জিনিস চুরি হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, ছ’বছর কেটে গেলেও এখনও পাঁচিল দিয়ে ঘেরাও হল না। কাঁটা তার দিয়ে কিছুটা ঘেরা থাকলেও পুরোটা হয়নি। একটা সময় এই পার্কটি পিকনিক স্পট হিসাবেও ব্যবহার হয়েছে। কিন্তু আজ তা আর সম্ভব নয়। কারণ গোটা জায়গাটি এখন জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। পার্কটিতে পিকনিক কিংবা শিশুদের খেলতে দেখা যায় না ঠিকই। তার বদলে এখানে বেড়েছে চোরেদের উপদ্রব। এই পার্কে লাগানো হয়েছিল চারটি হ্যালোজেন। পার্কের কর্মীদের অভিযোগ তার মধ্যে দুটি চুরি হয়ে গিয়েছে। তাই আরও দুটি খুলে রাখা হয়েছে। এছাড়া পার্কের পানীয় জল ও শৌচালয়ের অবস্থাও বেহাল। দুটি নলকূপ থাকলেও তা ব্যবহারের অযোগ্য। এমনকী শৌচালয়ে জলের ব্যবস্থাও নেই।

Advertisement

হারু মণ্ডল নামে এক কর্মী বলেন, “পর্যটকদের ব্যবহারের জন্য আমরা কয়েকটি বালতির ব্যবস্থা করেছিলাম। পাশের খাল থেকে জল এনে দেওয়া হত।” এইরকম অবস্থায় অনেকবারই পর্যটকরা পার্কে পিকনিকে এসে সমস্যায় পড়েছে। এখানে গাছ সংরক্ষণের জন্য প্রতিবছর কীটনাশক দেওয়া হত কিন্তু এখন তাও বন্ধ বলে জানায় এই পার্কের কর্মীরা। সেই সঙ্গে পাশে একটি মান্দারিয়া খাল রয়েছে। বর্ষার সময় খাল প্লাবিত হয়ে প্রত্যেকবছর ভাঙন হচ্ছে। এর ফলে ধীরে ধীরে পার্কটি খালের গর্ভে চলে যাচ্ছে বলে জানায় এলাকাবাসী। সমীর রায় নামে এক পর্যটক বলেন, “বেহাল অবস্থা পার্কের। তার মধ্যে কর্তৃপক্ষ টিকিট বাড়িয়ে চলেছে। এরকম চললে এখানে আর আসা যাবে না।” এ দিকে কর্তৃপক্ষের দাবি পার্কটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বিডিও গৌতম দত্ত বলেন, “পার্কটির আধুনিকরণের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখানে দোতলা কটেজ তৈরি করা হবে। তাতে অনুষ্ঠানের জন্য একটি হলঘরও রাখা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন