সহশিক্ষিকার বিরুদ্ধে হেনস্থা, মিথ্যা বদনাম দেওয়া এবং স্থানীয় মানুষকে উত্তেজিত করে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলে মানবাধিকার কমিশনে গেলেন চারজন শিক্ষিকা। ঘটনাটি আরামবাগ চক্রের নওপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
বিজলী মণ্ডল, ঙ্গীতা রেজা, তনুজা সরকার ও অপরাজিতা যশ নামে ওই চার শিক্ষিকার অভিযোগ, সালমা আসমিন আরা নামে ওই সহশিক্ষিকা তাঁদের বিরুদ্ধে মিড-ডে মিলের তরকারি খেয়ে নেওয়া, তাঁরে মারধরের মিথ্যা অভিযোগ তুলে অভিভাবকদের উত্তেজিত করে। যার প্রেক্ষিতে গত বছর ২৩ অগস্ট স্থানীয় কিছু বাসিন্দা তাঁদের শারীরিকভাবে নিগ্রহ করে। এমনকী সকলের সামনে তাঁর পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। জোর করে তাঁদের দিয়ে মুচলেকা লেখানো হয়েছে।
তাঁদের আরও অভিযোগ, ওই ঘটনার পর থেকে স্কুলে আসার পথে তাঁদের দেখে অনেকে ব্যঙ্গ করছেন। যার জেরে তাঁরা মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করছেন। এর থেকে উদ্ধার পেতেই তাঁরা মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। ওই শিক্ষিকাদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি সমস্ত স্তরে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোনও তদন্তের ব্যবস্থা হয়নি।
গত ২৩ অগস্ট কি ঘটেছিল স্কুলে?
বিদ্যালয় এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন কয়েক’শো বাসিন্দা স্কুলে ঢুকে ওই চার শিক্ষিকাকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। চার শিক্ষিকার প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগে ঘেরাও হন প্রধান শিক্ষক বিপ্লব দে রায়ও। বিক্ষোভের জেরে কোনও ক্লাস হয়নি। নিরাপত্তার অভাব বোধ করে প্রধান শিক্ষক স্কুল পরিদর্শক শেখর মন্ডলকে সমস্ত ঘটনা জানান। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভ তুলে দেয়। প্রধান শিক্ষক বলেন, “শিক্ষিকাদের নিজেদের মধ্যে সমস্যাটি ব্লক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতর দেখছে।” জেলার প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু অধিকারীর অবশ্য বক্তব্য, “সমস্যা মিটে গিয়েছে।”
গত ১৬ জুলাই সালামা আসমিন আরা নামে ওই সহশিক্ষিকার উপরে অন্য শিক্ষিকাদের হামলার অভিযোগ ওঠে। ওই সহশিক্ষিকা প্রধান শিক্ষককে সব জানিয়ে বিহিত চান। তাঁর দাবি, “স্কুলে নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আমার উপর হামলা হচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, ১৬ জুলাই আমাকে বিজলী মন্ডল এবং সঙ্গীতা রেজা শারীরিকভাবে হেনস্থা করেন। স্থানীয় মানুষকে আমি ডাকিনি।”
ওই চার শিক্ষিকার মানবাধিকার কমিশনে যাওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, মানবাধিকার কমিশনে গেলে কারও অপরাধ তো লঘু হয়ে যায় না।