দিনের বেলা কলকাতা বন্দর এলাকায় মালবাহী গাড়ি বন্ধ করার প্রভাব পড়তে চলেছে হাওড়ার উপরে। রাত বাড়লেই ফের যানজটে অবরুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, আন্দুল রোড এমনকী মুম্বই রোডেও। অন্তত এমনটাই আশঙ্কা হাওড়া সিটি পুলিশের। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ জানান, কলকাতা পুলিশ কতৃর্পক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বন্দর এলাকায় গাড়ির চাপ কমাতে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কোনও মালবাহী বড় ট্রাক-ট্রেলার ওই এলাকায় চলাচল করতে পারবে না। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টে পর্যন্ত শুধুমাত্র ১৬ হাজার কেজি ওজনের নিচে থাকা মালবাহী গাড়ি চলাচল করতে পারবে। কাল, শনিবার থেকে এ নিয়ম কার্যকর হবে।
হাওড়া সিটি পুলিশের আশঙ্কা, এই ব্যবস্থা চালু হলে চাপ পড়বে হাওড়ায়। কারণ দিনের বেলা বন্দরমুখী যে মালবাহী গাড়িগুলিকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে এবং ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগস্থল নিবড়া মোড়ে আটকে দেওয়া হবে সেগুলিকে রাত ১০টার পরে ছাড়ার সময়ে এক দিকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের কলকাতামুখী রাস্তায় যানজট হবে। তেমনই কলকাতার দিক থেকে ছাড়া মুম্বই রোডমুখী গাড়িগুলি আন্দুল রোড বা কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরার সময় ওই রাস্তাতেও যানজট তৈরি হবে। যার জের চলবে সারা রাত। এর আগে চলতি বছরে দু’দফায় সাঁতরাগাছি সেতু ১৫ দিন করে মেরামতির জন্য বন্ধ রাখায় তীব্র যানজটে ভুগেছিল হাওড়া। কিন্তু প্রশ্ন হল, ঠিক পুজোর মুখে কলকাতা পুলিশের এই সিদ্ধান্তের জন্য হাওড়া কেন ভুগবে? কেনই বা এই সমস্যার কথা কলকাতা পুলিশকে জানানো হবে না? হাওড়ার পুলিশ কমিশনার এ দিন বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের আগে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে একাধিক বার আলোচনা হয়েছে। বৈঠক হয়েছে হাওড়া জেলা পুলিশের সঙ্গেও। সারা দিন মালবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিলে রাতে যে এর প্রভাব মুম্বই রোড ও কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে পড়বে সে আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু সমস্যা যে হেতু হাওড়ার দিকে তাই তা আমরাই মেটাবো। এ জন্য আমরা সমস্ত রকম প্রস্তুতি নিয়েছি।’’
কী রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে?
হাওড়া পুলিশ কমিশনার জানান, ইতিমধ্যে বিভিন্ন ট্রাক এবং ট্রেলার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। চালকদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। তাঁদের গাড়ি চলাচলের নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার ব্যাপারে অবহিত করার কাজ চলছে। মুম্বই রোড বা দিল্লি রোডের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি চলাচলের সময়সীমা লিখে ফ্লেক্স ঝোলানো হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাফিক দফতরকে কড়া হাতে যানশাসন করতে বলা হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার এ দিন বলেন, ‘‘কলকাতা বন্দরমুখী মালবাহী গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করলেও শালিমার রেলইয়ার্ডে যাওয়া ট্রাক বা ট্রেলারের ক্ষেত্রে সেই নিয়ন্ত্রণ থাকছে না। এ জন্য শালিমারে যাওয়া গাড়িগুলিকে চিহ্নিত করে স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হবে। এর পরেও কোনও বন্দরমুখী ট্রাক অন্যায় ভাবে বিদ্যাসাগর সেতু ধরার চেষ্টা করলে সেই সব গাড়ি ধরে জরিমানা করা হবে।’’