চাকরির ফাঁদে পড়ে মালয়শিয়ায় আটক হাওড়ার যুবক

বিদেশে ভাল চাকরির দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন ‘প্লেসমেন্ট এজেন্সি’ যে নানা ভাবে বেকারদের প্রতারণা করছে সেই অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও বহু যুবক-যুবতী এই ভাবে প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। এ বার বিদেশে চাকরি দেওয়ার নাম করে শুধু প্রতারণা নয়, অভিযোগ যে প্রতিশ্রুতি মত চাকরি না পাওয়ায় বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসতে চাওয়া এক যুবককে মারধর করে আটকে রাখা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ ২০:২২
Share:

বিদেশে ভাল চাকরির দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন ‘প্লেসমেন্ট এজেন্সি’ যে নানা ভাবে বেকারদের প্রতারণা করছে সেই অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও বহু যুবক-যুবতী এই ভাবে প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। এ বার বিদেশে চাকরি দেওয়ার নাম করে শুধু প্রতারণা নয়, অভিযোগ যে প্রতিশ্রুতি মত চাকরি না পাওয়ায় বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসতে চাওয়া এক যুবককে মারধর করে আটকে রাখা হয়েছে। কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর পাসপোর্টও।

Advertisement

এমনই ঘটনা ঘটেছে হাওড়া থেকে মালয়েশিয়া চাকরি করতে যাওয়া এক যুবকের ক্ষেত্রে। হাওড়ার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪ নম্বর রাউন্ড ট্যাঙ্ক রোডের বাসিন্দা বিনয় জায়সবাল। বছর আঠাশের বিনয়কে পার্ক স্ট্রিটের একটি প্লেসমেন্ট এজেন্সি গত অগস্ট মাসে মালেয়েশিয়ায় ওয়েল্ডিং মিস্ত্রির পদে চাকরি দিয়ে পাঠায়। তাঁর সঙ্গে মালয়েশিয়া পাঠানো হয় আরও ২৮ জন যুবককে। সকলেরই মাসে বেতন ঠিক হয় ২৩ হাজার টাকা। ওই যুবকের অভিযোগ, মালয়েশিয়া পৌঁছনোর পর তাঁরা জানতে পারেন তাঁদের চাকরি হয়েছে এলাকার ঝাড়ুদারের পদে। বেতনও অনেক কম। এ কথা জানতে পারার পরই বাড়ি ফেরার চেষ্টা শুরু করেন ওই যুবক সব বাকিরা। কিন্তু সে কথা বুঝতে পেরে তাঁদের কাছ থেকে মোবাইলের সিম কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়। কেড়ে নেওয়া হয় পাসপোর্টও। বন্ধ করে দেওয়া হয় এলাকার বাইরে যাতায়াত। প্রতিবাদ করলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

ওই যুবকের পরিবারের লোকজন জানান, কয়েকদিন আগে ওই যুবক কোনও ভাবে একটা সিমকার্ড যোগাড় করে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপরেই ঘটনাটা জানাজানি হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে সাহায্য চাওয়া হয় স্থানীয় ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শৈলেশ রাইয়ের কাছে। শৈলেশবাবু জানান, ওই পরিবারের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তিনি ওই যুবকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নিজেই যান পার্ক স্ট্রিটের ওই এজেন্সির অফিসে। কিন্তু অফিস বন্ধ থাকায় তিনি কিছু জানতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিনিয়ত মোবাইলে পাঠানো মারধর খাওয়ার ছবি ও মেসেজ দেখে আমি বিষয়টা লাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়কে জানাই। তিনি ওই যুবকের মাকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে আবেদন জানাতে বলেন।’’ এরপরেই এ দিন ওই যুবকের মা রাজকুমারী দেবীকে নিয়ে শৈলেশবাবু নবান্নে যান মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে আবেদন পত্র জমা দিতে।

Advertisement

এ দিন ওই যুবকের মা বলেন, ‘‘ভাল চাকরি দেওয়ার নাম করে ওই এজেন্সি আমার ছেলের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমি পুলিশকেও জানিয়েছি। আমি চাই ছেলেকে সরকার ফিরিয়ে আনার সমস্ত রকম ব্যবস্থা নিক।’’ নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবককে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য রাজ্য সরকার সমস্ত রকম সাহায্য করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে গোটা বিষয়টি বিদেশ মন্ত্রককে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন