আর ডাক্তার জোগাড় করতে পারছে না স্বাস্থ্য দফতর। নতুন করে কয়েক হাজার ডাক্তার নিয়োগ করেও আকাল মিটছে না। রাজ্যে বড়-বড় সুপার স্পেশ্যালিটি-মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট তৈরি হয়েছে কিন্তু সেখানে ডাক্তার জোগাড় করতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এত দিন স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ঘাটতি নিয়ে যে অভিযোগ শোনা যেত বিরোধীদের গলায় তা মেনে নিয়ে ডাক্তার-সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ ফুটে উঠল খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়।
চিকিৎসক জোটাতে না-পারলে রাজ্যে নতুন কোনও হাসপাতাল করা বা কোনও হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো যে অসম্ভব, সেটা সোমবার নদিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘ডাক্তার পাওয়া যাচ্ছে না। সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। শুধু হাসপাতাল আর বেড চাইবে, ভাববে না সব কী ভাবে চলছে? ডাক্তার পাব কোথায়?’’
পরের পর সকলের সঙ্গে কথা বলছিলেন, খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। নবদ্বীপের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহার সময় যখন এল তখন বেশ রসিকতার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘নন্দ (পুণ্ডরীকাক্ষবাবুর ডাকনাম), তোমার কিছু বলার আছে? নবদ্বীপের জন্য সব করে দিয়েছি। আর কিছু বাকি নেই। তুমি এখন বসে বিশ্রাম নাও।’’ থেমেই গিয়েছিলেন পুণ্ডরীকাক্ষবাবু, তার পর কী একটা মনে হতে বলে ফেলেছিলেন, ‘‘শুধু নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে বহু বছর একটিও বেড বাড়েনি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর হালকা মেজাজ মুহূর্তে উধাও। রীতিমতো ঝাঁঝিয়ে উঠে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন মমতা, ‘‘ হবে না। শুধু চাই-চাই! চাওয়ার শেষ নেই তোমাদের। অনেক হয়েছে। এনাফ হয়েছে!’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘যখন রেলে ছিলাম তখন সবাই চাইতো বাড়ি-বাড়ি স্টেশন হোক, আর এখন সবাই চাইছে বাড়িতে হাসপাতাল। এটা সম্ভব নয়। ডাক্তার কোথায়?’’
আরও পড়ুন: সরি সুব্রতদা, ডেঙ্গি নিয়ে আপনি ফেল
প্রসঙ্গত, চিকিৎসকের অভাবে বহু সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এখনও ইনডোর চালু করা যায়নি, চালু হয়নি অস্ত্রোপচার। এসএনসিইউ-য়ের জন্য এক বার চিকিৎসক নিয়োগের কিছুদিনের মধ্যেই তাঁরা বেশির ভাগ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘এক বারও ভেবে দেখেছেন কী ভাবে সব চলছে?’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য এর পাল্টা মন্তব্য করেছেন, ‘‘ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কল্পতরু হয়েছিলেন, এখন নিজেই আর সামলাতে পারছেন না। স্বপ্নের ফানুস ফেঁসে গিয়েছে বলে গোসা করছেন।’’