মানবাধিকারের দশ চোখ-কান এ বার সব থানায়

সল্টলেকের ডিএফ ব্লকে বসে ভুটান সীমান্তের কুমারগ্রাম বা বাংলাদেশ সীমান্তের হিঙ্গলগঞ্জে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে কি না, তা জানা ভৌগোলিক দূরত্বের কারণেই কঠিন। অথচ এ ধরনের বিভিন্ন ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানবাধিকার কমিশন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৯
Share:

সল্টলেকের ডিএফ ব্লকে বসে ভুটান সীমান্তের কুমারগ্রাম বা বাংলাদেশ সীমান্তের হিঙ্গলগঞ্জে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে কি না, তা জানা ভৌগোলিক দূরত্বের কারণেই কঠিন। অথচ এ ধরনের বিভিন্ন ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানবাধিকার কমিশন। এ বার তাই রাজ্যের প্রতিটি থানা এলাকায় দশ জন করে ‘মানবাধিকার স্বেচ্ছাসেবক’ নেবে পশ্চিমবঙ্গ মানবাধিকার কমিশন। কোনও রকম পারিশ্রমিক বা সাম্মানিক না নিয়ে কাজ করা ওই স্বেচ্ছাসেবীরা প্রত্যন্ত তল্লাটেও তাদের ‘চোখ-কান’ হিসেবে কাজ করবে বলে কমিশনের আশা। মঙ্গলবার কমিশন সর্বসম্মত ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

কমিশনের চেয়ারম্যান, কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘দূরদূরান্ত থেকে মানুষের পক্ষে কমিশনে আসা মুশকিল। আমাদেরও সেখানে গিয়ে খবর নেওয়া সমস্যা। স্বেচ্ছাসেবকেরা সেই অসুবিধে দূর করতে পারেন।’’

গিরীশবাবুর কথায়, ‘‘স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে চাপও রাখা যাবে। মানবাধিকার লঙ্ঘন করার আগে কেউ দু’বার ভাববেন। গণ্ডগোল করলে কেউ দেখার আছে, এটা মাথায় থাকবে।’’

Advertisement

গিরীশবাবুর আগে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচাপরপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, ‘‘এটা ভাল উদ্যোগ। রাজ্যের সর্বত্র কমিশনের পক্ষে পৌঁছনো সম্ভব নয়। আর যে হেতু বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে হবে, তাই যোগ্য মানুষই স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যোগ দেবেন বলে আশা করা যায়।’’

গোটা রাজ্যে মোট থানার সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচশো। সে ক্ষেত্রে মানবাধিকার স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে পাঁচ হাজার।

কমিশন জানাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ-মাধ্যমিক বা সমপর্যায়ের কোনও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। রাজনৈতিক দলের সদস্য, নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য, অপরাধের অতীত আছে, ফৌজদারি মামলা ঝুলছে এমন কাউকে নেওয়া হবে না। বয়স ৩০ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। কমিশন চায়, স্বেচ্ছাসেবীরা শারীরিক ও মানসিক ভাবে শক্তসমর্থ হবেন। তাঁদের কাছে অন্তত একটি চালু মোবাইল ফোন থাকতে হবে।

আপাতত এক বছরের জন্য এঁদের নেওয়া হচ্ছে। তবে প্রয়োজনে কমিশন যে কোনও সময়ে কোনও কারণ দর্শানো ছাড়াই এঁদের কাজ থেকে সরাতে পারে। কমিশন প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবীকে পরিচয়পত্র দেবে। আগামী ১ মার্চ থেকে কমিশনের ওয়েবসাইটে অনলাইনে বা ডাকে আবেদন করা যাবে। স্বেচ্ছাসেবীরা নিজের নিজের এলাকায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার উপর নজর রাখবেন ও তেমন কিছু ঘটলে কমিশনকে অবহিত করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন