ডানকুনির বধূ উদ্ধার পুণেতে, গ্রেফতার ৪

মামলা হাতে পেয়ে সন্দেহ হয়েছিল দুঁদে পুলিশ অফিসার (এক সময়ে সিআইডি-র অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিট বা এএইচটিইউ-এর অফিসার, বর্তমানে এসিপি ট্রাফিক, চন্দননগর) শর্বরী ভট্টাচার্যের।

Advertisement

দীক্ষা ভুঁইয়া ও শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:৩৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপরে অত্যাচার চলছিল। কয়েক মাস পর থেকে মেয়ের খোঁজ পাচ্ছিলেন না মা-বাবা। তাই ডানকুনি থানায় পণের দাবিতে বধূ-নির্যাতেনর মামলা রুজু করেন মা। কিন্তু মেয়ে কোথায়?

Advertisement

মামলা হাতে পেয়ে সন্দেহ হয়েছিল দুঁদে পুলিশ অফিসার (এক সময়ে সিআইডি-র অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিকিং ইউনিট বা এএইচটিইউ-এর অফিসার, বর্তমানে এসিপি ট্রাফিক, চন্দননগর) শর্বরী ভট্টাচার্যের। গত ৩০ মে মেয়ের মায়ের আরও একটি লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শর্বরীদেবীর সঙ্গে যৌথ ভাবে তদন্তে নামে ডানকুনি থানার পুলিশ। সেই তদন্তের ভিত্তিতে বছর উনিশের তরুণী গৃহবধূকে রবিবার পুণে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে ওই তরুণীধূকে পাচারের মূল চক্রী আনসারুল হক, মর্জিনা বিবি, বরজাঁহা আলি এবং জামশেদ আলি।

তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, গত বছরের শেষ দিকে ডানকুনির বাসিন্দা, পেশায় সংবাদপত্র বিক্রেতা এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় ওই তরুণীর। বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির অন্যেরা মেয়েটির উপরে অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তরুণীর মা জানতে পারেন, মেয়ে নিখোঁজ। জামাইও পলাতক। পণের দাবিতে মেয়ের উপরে অত্যাচার হয়েছে বা মেয়েকে খুন করা হয়েছে ভেবে তিনি ডানকুনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কয়েক মাস আগে মেয়ের মায়ের মোবাইলে একটি অপরিচিত পুরুষ কণ্ঠের ফোন আসে। মায়ের দাবি, ‘‘ফোনে বলা হয়, মেয়ে বেঁচে আছে। ভয়ের কিছু নেই।’’

Advertisement

ফোন পেয়ে মা আবার পুলিশের দ্বারস্থ হন। তদন্তকারী অফিসারেরা নিশ্চিত হন, তরুণীকে পাচার করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়। উদ্ধারের পরে ওই গৃহবধূ তদন্তকারীদের জানান, তাঁর স্বামী ফেব্রুয়ারিতে মর্জিনা বিবি নামে এক মহিলাকে বা়ড়িতে নিয়ে আসেন। সেলসের কাজ দেবেন বলে এক দিন তাঁকে ট্রেনে চাপিয়ে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হয়। ভুল ভাঙে মর্জিনা বিবি তাঁকে জামশেদ আলির হাতে তুলে দেওয়ার পরে। ওই তরুণীর অভিযোগ, জামশেদ তাঁকে ধর্ষণ করে তুলে দেয় বরজাঁহা আলির হাতে। বরজাঁহাও তাঁকে ধর্ষণ করে। যৌন ব্যবসার কাজে সে তাঁকে কখনও গোয়া, কখনও হায়দরাবাদ, কখনও বা বেঙ্গালুরু, কেরলে নিয়ে যেত।

ওই বধূর অভিযোগ, মর্জিনাকে বাড়িতে ডেকে স্বামীই টাকার বিনিময়ে তাঁকে তুলে দেন পাচারকারীদের হাতে। তদন্তকারীরা জানান, এই চক্রের জাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং বাংলাদেশেও ছড়িয়ে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন