প্রভাবশালী নই, জনপ্রিয়, ব্যাখ্যা মদনের

তিনি প্রভাবশালী নন। জনপ্রিয়। তা আসন্ন নির্বাচনে প্রমাণ হবে বলে দাবি করছেন সারদাকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। বুধবার আলিপুর আদালতে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক সৌগত রায়চৌধুরীর আদালতে মদনবাবুকে হাজির করানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৬ ২০:০৩
Share:

তিনি প্রভাবশালী নন। জনপ্রিয়। তা আসন্ন নির্বাচনে প্রমাণ হবে বলে দাবি করছেন সারদাকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র।

Advertisement

বুধবার আলিপুর আদালতে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক সৌগত রায়চৌধুরীর আদালতে মদনবাবুকে হাজির করানো হয়। আদালত চত্বরে মদনবাবু বলেন, ‘‘আমি নির্দোষ। তবে বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রয়েছে। আমি এখন প্রভাবশালী নই। জেলে রয়েছি। কিন্তু কামারহাটির মানুষ আমাকে জয়ী করে প্রমাণ করে দেবেন আমি জনপ্রিয়।’’ মদনবাবুর ব্যাখা, নির্বাচন ক্ষেত্র গণতন্ত্রের পীঠস্থান। ওটা সাধারণ মানুষের বিচার ব্যবস্থা।

আলিপুর আদালতের আইনজীবীদের একাংশের কথায়, সিবিআই মদনবাবুকে প্রভাবশালী তত্ত্বে বিঁধে জামিনের বিরোধিতা করে চলেছে। তাঁদের মতে, জেল থেকে নির্বাচনে লড়ে জয়ী হলেও জামিনের সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ মদনবাবু এতটাই প্রভাবশালী যে জেলে থেকেও নির্বাচিত হয়েছেন, এই যুক্তিই পেশ করবে সিবিআই। তাঁর জামিন মঞ্জুর হলে তদন্ত কত ভাবে প্রভাবিত হতে পারে সে কথাই সিবিআই তুলবে। সেই কারণে মদনবাবু কৌশলে ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্ব খারিজ করে ‘জনপ্রিয়’ তত্ত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন- ঋতুপর্ণা বিজেপি প্রার্থী? জল্পনায় জল ঢাললেন নায়িকাই

তবে এ রাজ্যর নির্বাচনের নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন বলে দাবি করেন মদনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘জেল থেকে নির্বাচনে লড়াই করার সাহস আর কেউ দেখায়নি। একমাত্র অধীর চৌধুরী আত্মগোপন অবস্থায় ১৯৯৮ সালে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থেকে লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন। মদনবাবুর দাবি, ওই সময় তিনিই অধীরবাবুর নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন। ওই সময় বেশ কয়েক বার সিপিএম তাঁর মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে শাসানি দিয়েছিল। মদনবাবুর আক্ষেপ, সেই অধীর চৌধুরী সিপিএমের হাত ধরেছেন।

হাত-হাতুড়ির পাশাপাশি পদ্মফুলের জোট হয়েছে। মদনবাবুর ব্যাখ্যা, প্রকাশ্যে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট আসন সমঝোতা করেছে। তলায় তলায় বিজেপির সঙ্গেও জোট হয়েছে। তা সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ বছরে যা উন্নয়ন করেছেন, তাতে তৃণমূল প্রায় ২৪০টি আসন পাবে।

মদনবাবু কারা দফতরের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কাছে মনোনয়নপত্র পেশ করবেন। মনোনয়নের সব বিষয়ে দেখভাল করবেন তাঁর আইনজীবী নীলাদ্রি ভট্টাচার্য। জেল থেকেই নির্বাচনী প্রচার পরিকল্পনা করবেন মদনবাবু। কামরাহাটির কর্মী-সমর্থকেরা তাঁর দুই ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। মদনবাবুর সঙ্গে দুই ছেলে সব বিষয়ে আলোচনা করে পরিকল্পনা করবেন। এ দিনও তিনি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘‘মমতাদি আমাকে নির্বাচনে লড়াই করার অনুমতি দিয়ে আমার ও আমার পরিবারের সম্মান সুরক্ষিত করেছেন। আমি ও আমার পরিবার তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।’’ সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও টেলিভিশন চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মদনবাবু নির্দোষ। সেই কারণেই তাঁকে নির্বাচনের টিকিট দেওয়া হচ্ছে।

এ দিন পায়ে স্নিকার, কালো টি-শার্ট ও ট্রাক প্যান্ট পরে আদালতে আসেন মদনবাবু। পাঞ্জাবি ছেড়ে টি-শার্ট? মদনবাবু বলেন, ‘‘নির্বাচনের মাঠে নেমে গিয়েছি তো। একেবারে খেলোয়াড় সুলভ পোশাক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন