Madhyamik

‘পথের পাঁচালী পড়ার ভাললাগাটুকু ছাপিয়ে গেল আজ আমার’

ভাল ফল হবে জানতাম। কিন্তু একেবারে প্রথম? না, ভাবিনি।

Advertisement

সঞ্জীবনী দেবনাথ, মাধ্যমিকে প্রথম

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৮ ১৪:১৭
Share:

মাধ্যমিকে প্রথম সঞ্জীবনী দেবনাথ।

রাতে কিছুতেই ঘুম আসছিল না। রাত পোহালেই রেজাল্ট বেরোবে! কেমন একটা চিন্তায় ডুবে যাচ্ছিলাম বার বার। ঠিক দুশ্চিন্তা নয়! তবে, ঘুমটা আসছিল না। কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে তাই গান শুনছিলাম। যদি ঘুম আসে। তবে, শেষমেশ ঘুমটা মোটেও হয়নি।

Advertisement

সকালে উঠে ঘুম পাওয়া চোখেই টিভির সামনে হাঁ করে বসে ছিলাম। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি সাংবাদিক বৈঠক শুরু করেছেন। চোখটা কেমন জড়িয়ে আসছে। আচমকাই রাজ্যে প্রথম দশের নাম ঘোষণা শুরু হল। কী যেন নাম বললেন? সঞ্জীবনী দেবনাথ? ঘরটা কেমন থমথমে হয়ে উঠল। ঠিক শুনছি তো? কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বাবা-মা জড়িয়ে ধরল আমাকে। আমি! হ্যাঁ আমার নামটাই তো বললেন উনি!

কী করব তখনও বুঝে উঠতে পারছি না। সারা বাড়িতে কেমন একটা উৎসব শুরু হয়ে গেল। আস্তে আস্তে আমাদের নরনারায়ণ রোডের গোটা বাড়িতে মেলার মতো ভিড়। নিউ কদমতলার আশপাশে যত চেনা মানুষজন রয়েছেন, সক্কলে বাড়িতে এসে হাজির। অনেকেই ফোন করতে শুরু করেছেন। স্কুলের দিদিমণিরা, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পাড়ার সব কাকু-পিসিরা বাড়িতে এসে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। কেউ কেউ আমার সঙ্গে নিজস্বীও নিয়ে নিলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাড়িতে এসে হাজির রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ আর আমাদের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। আমার রেজাল্টের খবর শুনে ওঁরা এসেছেন! ভাবতেই পারছিলাম না। আমি প্রথম হব এটাও ভাবিনি। সত্যি। ভাল ফল হবে জানতাম। কিন্তু একেবারে প্রথম? না, ভাবিনি।

Advertisement

দেখুন ভিডিয়ো

আরও পড়ুন : মাধ্যমিকে প্রথম কোচবিহারের সঞ্জীবনী, দ্বিতীয় বর্ধমানের শীর্ষেন্দু

তবে ভাল ফলের জন্য অবশ্যই স্কুল কোচবিহারের সুনীতি অ্যাকাডেমি আর আমার বাড়ির পরিবেশের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমার বাবা পঙ্কজকুমার দেবনাথ কোচবিহার কলেজের অধ্যক্ষ, মা সীমা দেবনাথ দিনহাটা হাইস্কুলের শিক্ষিকা। আমার সাত জন গৃহশিক্ষকও ছিলেন। ওঁদের অনুপ্রেরণা ছাড়া এ রকম ফল হতই না।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস আর অন্য শিক্ষিকারা অপেক্ষা করছেন, কখন আমি সেখানে যাব। শিক্ষিকারা বললেন, জেলাশাসক কৌশিক সাহা আমাদের স্কুলে এসেছিলেন।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’ পড়তে আমার অসম্ভব ভাল লাগে। যত বার পড়ি, তত বারই ভেতরটা কেমন হয়ে যায়। সে রকম কি না ঠিক জানি না। তবে, আজ সব মিলিয়ে অদ্ভুত একটা ভাল লাগছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement