মাওবাদী দমনে অভিন্ন কম্যান্ড

বাংলায় মাইন ফাটিয়ে ঝাড়খণ্ডে পালিয়ে যাওয়া বা ওড়িশায় খুন করে পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দেওয়া মাওবাদীদের পুরনো ছক। প্রতিবেশী রাজ্যগুলির পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে কাজে লাগিয়েই কাজ হাসিল করে থাকে তারা।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

বাংলায় মাইন ফাটিয়ে ঝাড়খণ্ডে পালিয়ে যাওয়া বা ওড়িশায় খুন করে পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দেওয়া মাওবাদীদের পুরনো ছক। প্রতিবেশী রাজ্যগুলির পুলিশের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে কাজে লাগিয়েই কাজ হাসিল করে থাকে তারা। এই কৌশলে এ বার ছেদ টানতে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে মাওবাদী দমনের একটি পৃথক ব্যবস্থা গড়ার প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

Advertisement

মাওবাদী দমন সংক্রান্ত উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার আর কে সিংহ নবান্নকে জানিয়েছেন, তিন রাজ্যের পুলিশ, গোয়েন্দা এবং বিশেষ ঘাতক দলকে নিয়ে তৈরি করা হবে জয়েন্ট কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার। ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূমে হবে কম্যান্ডের সদর কার্যালয়। তার প্রধান হবেন জেলার এসপি। কেন্দ্রের প্রস্তাবে আপত্তি নেই রাজ্যের। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘এ রাজ্যে মাওবাদীদের তেমন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু মাঝেমধ্যে ঝাড়খণ্ড বা ওড়িশা কেউ সীমানা পেরিয়ে ঢুকে এখানে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করে। যদি একটি কম্যান্ড তৈরি করা যায়, তা হলে মাওবাদীদের কৌশল ভেস্তে দেওয়া যাবে।’’

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এখন জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের তেমন গতিবিধি নেই। শুধু মাত্র বীরেনের নেতৃত্বে একটি স্কোয়াড মাঝে-মাঝে ঘোরাফেরা করছে। কোনও কোনও নেতা মালদহে গিয়ে দু’এক বার বৈঠকও করে এসেছেন। হিসেব বলছে, রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে ২৯১টি মাওবাদী হামলা বা দমন সংক্রান্ত মামলা চলছে। সব মিলিয়ে ২৮২ জন মাওবাদী জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় বন্দি রয়েছে ৮২ জন। মাওবাদী দমনে রাজ্যে এখন ৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী জঙ্গলমহলে মোতায়েন রয়েছে।

Advertisement

এক পুলিশ কর্তার পর্যবেক্ষণ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ধারাবাহিক তল্লাশি অভিযানের ফলে জঙ্গলমহলে আপাতত নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে মাওবাদীরা। তারা বিভিন্ন জেলা শহর ও কলকাতায় গণ সংগঠনের আ়ড়ালে নতুন করে আন্দোলনের পথ খুঁজছে। তারা পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া, পিডিসিআই, জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ, ইসলামিক স্টুডেন্ট ঐক্যের মতো বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বোঝাপড়া করে চলছে। ভাঙড়ে এই দুই শক্তির বোঝাপড়ায় আন্দোলন হয়েছে বলে ওই গোয়েন্দা কর্তা জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন