রূপান্তরকামীদের ফি মকুব ইগনু-র

ইগনু-র রঘুনাথগঞ্জ রিজিওনাল সেন্টারের আওতায় মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের ১১টি ‘স্টাডি সেন্টার’ রয়েছে। রিজিওনাল ডিরেক্টর শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘৭ জুলাই বহরমপুরে রূপান্তরকামীদের নিয়ে সচেতনতা শিবির হবে। রূপান্তরকামী ও বৃহন্নলারা সার্টিফিকেট দেখাতে পারলেই তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে।’’

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ১৩:০০
Share:

রূপান্তকামীদের পড়ার ফি মকুব করে দিল ইন্দিরা গাঁধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি (ইগনু)।

Advertisement

সম্প্রতি ইগনু-র তরফে নির্দেশিকা দিয়ে এই সিদ্ধান্তের জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকার, মেডিক্যাল অফিসারের সার্টিফিকেট বা আধার কার্ড দেখাতে পারলেই ফি দেওয়া থেকে অব্যাহতি মিলবে।

ইগনু-র শিলিগুড়ি, রঘুনাথগঞ্জ এবং কলকাতা রিজিয়নের একাধিক সেন্টারে প্রতি বছর বহু পড়ুয়া ভর্তি হন। তবে বিগত কয়েক বছরে কত রূপান্তরকামী ভর্তি হয়েছেন, তার হিসেব মেলেনি।

Advertisement

তবে ইগনু-র এই সিদ্ধান্তে খুশি রূপান্তরকামীরা। তাঁরা বিষয়টিকে একটি স্বীকৃতি হিসেবেই দেখছেন। তাঁদের অনেকেরই দাবি, রাজ্যের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও এই ধরনের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিক। সেই সঙ্গে, কর্মক্ষেত্রে সংরক্ষণের দাবিও উঠছে।

কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের প্রথম রূপান্তরকামী যিনি এমন পদে পৌঁছেছেন। রাজ্যের রূপান্তরকামী উন্নয়ন বোর্ডের সহ-সভাপতি মানবী বলেন, ‘‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও ইগনু-র এই সিদ্ধান্তে প্রভাবিত হবে বলে আমার আশা। তবে শুধু শিক্ষায় ফি ছাড় দিলে তো হবে না। চাকরি ক্ষেত্রেও যেন সংরক্ষণ দেওয়া হয়।’’

ইগনু-র পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে রূপান্তরকামীদের সংগঠন ‘মধ্য বাংলা সংগ্রাম’ও। সংগঠনের সম্পাদক অরুণাভ নাথ বলেন, ‘‘অনেকেই গরিব ঘর থেকে আসছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, স্কুল-কলেজ সর্বত্র এই ধরনের ছাড় যাতে দেওয়া হয়, আমরা সেই দাবি জানাচ্ছি।’’

ইগনু-র রঘুনাথগঞ্জ রিজিওনাল সেন্টারের আওতায় মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের ১১টি ‘স্টাডি সেন্টার’ রয়েছে। রিজিওনাল ডিরেক্টর শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘৭ জুলাই বহরমপুরে রূপান্তরকামীদের নিয়ে সচেতনতা শিবির হবে। রূপান্তরকামী ও বৃহন্নলারা সার্টিফিকেট দেখাতে পারলেই তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে।’’

কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলিও। এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি বাবুসোনা সরকার বলেন, ‘‘সকলের শিক্ষার অধিকার আছে। ইগনু সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হল।’’

তবে টিএমসিপি-র নদিয়া জেলা সভাপতি অয়ন দত্তের দাবি, ‘‘রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও গরিব ছাত্রছাত্রীদের নানা ভাবে সাহায্য করে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীই তো মানবী বন্দ্যো‌পাধ্যায়কে কলেজের অধ্যক্ষ করেছেন!’’

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষ আবার নির্বিচারে সব রূপান্তরকামীর ফি ছাড় দেওয়ার বিপক্ষে। তাঁর যুক্তি, আর্থিক দিক দিয়ে যারা দুর্বল, তাদেরই সাহায্য করা দরকার। প্রয়োজনে শুধু ফি মকুব করা নয়, বইখাতা কিনে দেওয়া থেকে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে। কিন্তু শুধু রূপান্তরকামী হওয়াই কোনও মাপকাঠি হতে পারে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement