মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সামনে নেই কোনও র্যাম্প । ছবি: দেবরাজ ঘোষ
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা পরিদর্শনে এলে রাজ্যের অনেক মেডিক্যাল কলেজই অন্য জায়গা থেকে শিক্ষক ও নানা সরঞ্জাম ধার করে কুমিরছানা দেখানোর ঢঙে সমর্থ পরিকাঠামোর ‘প্রমাণ’ দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে!
সারা দেশে শ্রেষ্ঠত্বের নিরিখে পঞ্চম স্থান খড়্গপুর আইআইটি-র। কিন্তু সেই কৃতিত্বের তকমা পেতে ওই নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও ভুল তথ্যের আশ্রয় নিয়েছে বলে অভিযোগ।
অন্য কেউ নয়, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সচিব আর সুব্রহ্মণ্যমকে চিঠি দিয়ে এই অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের একাংশই। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (এনআইআরএফ)-এ উপরের দিকে ঠাঁই পাওয়ার তাগিদে আইআইটি-র তরফে অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে জানানো হয়েছে যে, প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের জন্য সব ভবনে লিফট ও র্যাম্প এবং উপযোগী শৌচালয় রয়েছে। বাস্তবে কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তা নেই।
সচিবের কাছে ওই পড়ুয়াদের আর্জি, প্রতিবন্ধীদের জন্য সব ধরনের সুবিধা রয়েছে কি না, মন্ত্রক থেকে পর্যবেক্ষক পাঠিয়ে সেটা দেখা হোক। ক্ষতির আশঙ্কায় ওই ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখছেন।
ওই অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি পেয়ে আনন্দবাজারের তরফে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা যায়, ধাতুবিদ্যা, মেকানিক্যাল, স্থাপত্য, খনি, সমুদ্রবিদ্যা, অ্যারোস্পেস, কেমিক্যাল, ইলেক্ট্রিক্যাল-সহ বিভিন্ন বিভাগে কোনও র্যাম্প বা লিফট নেই। বিশেষ শৌচাগারও নেই। ছাত্রছাত্রীদের আবাস আজাদ হল, মদনমোহন মালব্য, রাধাকৃষ্ণন, সরোজিনী নায়ডু, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর নামাঙ্কিত হলেও কোনও র্যাম্প ও লিফট নেই।
“র্যাম্প না-থাকায় বন্ধুদের সাহায্য নিয়েই সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয়। আমার বিভাগেও তো র্যাম্প, লিফট বা বিশেষ শৌচাগার নেই। কষ্ট হয়। অনেক সময় স্নাতক স্তরের ক্লাস নিতে দোতলা-তেতলায় যেতে হয়। তখন তো দুর্বিষহ অবস্থা হয়,” বললেন অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষক, প্রতিবন্ধী বাবুরঞ্জন ঠাকুর।