Crime

ঠিকানা মুঙ্গের, অস্ত্র আসছে সেখান থেকেই

মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থেকে শুরু করে রানিনগর, রানিতলা, ভগবানগোলা, লালগোলা, রঘুনাথগঞ্জ, সুতি, শমসেরগঞ্জ, ফরাক্কা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৭:২৬
Share:

উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র। নিজস্ব চিত্র

বিহারের মুঙ্গের থেকে মালদহের কালিয়াচক ছুঁয়ে মুর্শিদাবাদ—এই চেনা রুটেই অস্ত্র ঢুকছে বলে দাবি পুলিশ সূত্রের। কখনও সড়কপথে, কখনও বা ট্রেনে করে গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে অস্ত্র কারবারিরা। মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, বরাবরই মুর্শিদাবাদের মতো জেলায় অস্ত্রের কদর রয়েছে। ভোট এলেই সেই কদর অনেক বেড়ে যায়। মুঙ্গেরের কারবারিরা সেই অস্ত্র নানা ভাবে পৌঁছে দিচ্ছে গন্তব্যে। পুলিশের তথ্য বলছে, গত কয়েক বছর ধরে মুর্শিদাবাদে যে সব বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে তার সিংহভাগই মুঙ্গের থেকে এসেছে। পুলিশি অভিযানের জেরে অস্ত্র কারবারিরা কখনও রুট পরিবর্তন করেছে, কখনও বা মহিলাদের ব্যবহার করে কারবার সচল রাখার চেষ্টা করেছে। তবে পুলিশও কারবারিদের মধ্যে সোর্স বাড়িয়ে তাদের উপর লাগাতার নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। যার জেরে অস্ত্র উদ্ধারও হচ্ছে।

Advertisement

মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘লাগাতার অস্ত্রকারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এক দিকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তেমনই গ্রেফতারও হয়েছে অনেকে। যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের সঙ্গে কাছ থেকে নানা তথ্য জেনে কারবারিদের জালে আনতে সুবিধা হচ্ছে। যার জেরে কোনও কারবারি অস্ত্র নিয়ে ঢুকলেই পুলিশের কাছে তথ্য চলে আসছে।’’

মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থেকে শুরু করে রানিনগর, রানিতলা, ভগবানগোলা, লালগোলা, রঘুনাথগঞ্জ, সুতি, শমসেরগঞ্জ, ফরাক্কা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। জেলার একাংশে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত রয়েছে। ভোট ছাড়াও নানা সময়ে জেলা জুড়ে অস্ত্রের কারবার চলে। কখনও ভোটের জন্য, কখনও পাচারের, কখনও বা ব্যক্তিগত কাজে সেই অস্ত্র কাজে লাগায়। মুর্শিদাবাদে কথায় কথায় সামান্য ঝামেলায় অস্ত্র বের করার উদাহরণও রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জোর দিতে এবছর ১ জানুয়ারি থেকে মুর্শিদাবাদে দুটি পুলিশ জেলা হয়েছে। তার পরেও অস্ত্র উদ্ধারে বিরাম নেই।

Advertisement

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুঙ্গের থেকে ট্রেনে করে ফরাক্কায় নেমে সেখান থেকে সড়কপথে অস্ত্র পৌঁছে দেয় কারবারিরা। আবার মুঙ্গের থেকে মালদহের কালিয়াচক ছুঁইয়ে ফরাক্কা হয়ে মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র ছড়িয়ে পড়ে। এই রুটে আসা একাধিক কারবারি ধরা পড়ার পরে অন্য রুটে আসার চেষ্টা করে। মুঙ্গের থেকে ট্রেনে করে হাওড়া-কলকাতা ছুঁইয়ে সড়কপথে বর্ধমান হয়ে আসার পথে কান্দিতেও মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের হাতে অস্ত্র কারবারি ধরা পড়ার ঘটনা ঘটেছে। আবার সন্দেহ দূর করতে অস্ত্র কারবারে মহিলাদেরও কাজে লাগাতে দেখা গিয়েছে। পুলিশের তথ্য বলছে, গত এক বছরে ফরাক্কা ও বহরমপুর থানার পুলিশ অস্ত্র কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এত সবের পরেও অস্ত্র ঢুকছে কী করে? জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অস্ত্র কারবারিরাতো ফাঁক-ফোকর বের করে কারবার চালানোর চেষ্টা করবে। তবে পুলিশও লাগাতার ধরপাকড় করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন