ভাইয়ের পাতেও পড়তে পারে জিএসটি-র আঁচ

সীতাভোগ-মিহিদানার শহরে নানা দোকান এ বার তৈরি করেছে কাশ্মীরি লাড্ডু, মালাই লাড্ডু,  মালাই সন্দেশ, রেনবো সন্দেশ, পাঞ্জাবি পেঁড়ার মতো মিষ্টি।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:০৪
Share:

 রসালো: কালনা ও কাটোয়ার দোকানে চলছে প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

রাত পোহালেই ভাইফোঁটা। তবে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন দু’তিন রাত আগে থেকেই। প্রচলিত মিষ্টির পাশাপাশি ভাইদের পাতে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ কী রাখা যায়, চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার থেকেই সেই সব মিষ্টির পসরা দোকানে সাজিয়ে ফেলেছেন অনেক বিক্রেতা।

Advertisement

মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানান, এ বার আবহাওয়া ভাল নেই। ছানার তৈরি মিষ্টি তৈরি করে রাখা যাচ্ছে না। তাই ক্ষীরের মিষ্টিরই এ বার রমরমা। তাঁদের দাবি, জিএসটি-র কোপে কাঁচামালের দাম খানিক বাড়লেও রকমারি মিষ্টি তৈরিতে কসুর করছেন না তাঁরা। চেষ্টা করছেন দাম ক্রেতার আয়ত্তের মধ্যেই রাখতে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু ক্ষেত্রে দাম বাড়াতেই হচ্ছে, দাবি অনেক ব্যবসায়ীর।

সীতাভোগ-মিহিদানার শহরে নানা দোকান এ বার তৈরি করেছে কাশ্মীরি লাড্ডু, মালাই লাড্ডু, মালাই সন্দেশ, রেনবো সন্দেশ, পাঞ্জাবি পেঁড়ার মতো মিষ্টি। বর্ধমানের বিসি রোডের এক দোকানের কর্ণধার জয়দেব নাগ জানান, এ বার অনেক রকম মিষ্টি তৈরি করেছেন তাঁরা়। নানা আকারের ক্ষীরের তৈরি সন্দেশ, লাড্ডু বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকা দামে। রানিগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী সৌমেন দাস বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার থেকেই মিষ্টি কেনা শুরু হয়ে গিয়েছে। সন্দেশের বিক্রি বেশি।’’ তিনি জানান, কাজু মালাই সন্দেশ, রেনবো সন্দেশ, কাজু মালাই ড্রাই ফ্রুট মিষ্টির ভাল চাহিদা রয়েছে তাঁদের দোকানে।

Advertisement

শহরের মেহেদিবাগানের মিষ্টি বিক্রেতা প্রমোদকুমার সিংহ জানান, প্রচুর মিষ্টির সম্ভার রাখছেন তাঁরা। ক্রিম চকোলেট থেকে পাঞ্জাবি পেঁড়া, থাকছে বৈচিত্র্যও। এ ছাড়া শহরের বোরহাট, বড়বাজার, তেঁতুলতলা বাজার, জেলখানা মোড়, সদরঘাট রোডের দোকানগুলিতেও নানা রকমের মিষ্টির পসরা পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

কালনার চকবাজার ও পোস্টঅফিসের উল্টো দিকের নানা মিষ্টির দোকানে গিয়ে জানা যায়, ভাইফোঁটা উপলক্ষে তৈরি করা হয়েছে প্রায় দেড়শো রকমের মিষ্টি। ব্রেকরোল, ক্যাডবেরি কেক, আপেল সন্দেশ, লেমনচপ, চকোলেট বরফি, কাশ্মীরি কালাকাঁদ, জলভরা সন্দেশ, মালাইচপ, ক্ষীরের প্যাটিস— তালিকা বেশ লম্বা। একটি দোকানের মালিক রণজিৎ মোদক বলেন, ‘‘জিএসটি-র জেরে কাজু, পেস্তা, আমসত্ত্ব, গোলাপজল-সহ নানা কাঁচামালের দাম এ বার বেড়েছে। চড়া দামে কিনতে হচ্ছে দুধ, ছানাও। তবে মিষ্টির দাম সেই তুলনায় বাড়ানো হয়নি।’’ বৈদ্যপুর মোড়ে এক দোকানের মালিক বিকাশ ঘোষও বলেন, ‘‘চাষির ফসলের ভাল দাম পাননি এ বার। সব দিক মাথায় রেখে দাম বাড়ানো যায়নি।’’

কাটোয়া রেলগেট চত্বরের মিষ্টি বিক্রেতা তাপস ঘোষ জানান, প্রতি বারের মতো এ বারও তাঁরা আড়াইশো টাকায় ২০টি মিষ্টির প্যাকেটের ব্যবস্থা রাখছেন। তাতে থাকছে ক্ষীরপুলি, ডিমপাতুরি, কড়াপাকের সন্দেশ। থানা রোডের ব্যবসায়ী প্রবীর মোদক জানান, তাঁদের বিশেষ আইটেম হিসেবে রয়েছে ক্রিম কালাকাঁদ, ক্যাডবেরি প্যাটিস। মঙ্গলকোটের নিগনের মিষ্টি প্রস্তুতকারক কুন্তল হাজরা জানান, ভাইফোঁটার জন্য মালাই লাড্ডু, শাহিপান, বেকড রসগোল্লা ও মিহিদানা, চকো বরফি তৈরি করেছেন তাঁরা। রাখছেন সুগার ফ্রি বাটারস্কচ সন্দেশ, ডায়মন্ডনাট। কাটোয়া মিষ্টান্ন সমিতির সম্পাদক পরেশ সাহা বলেন, ‘‘ছানার দাম বেশি থাকায় কিছু মিষ্টির দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।’’

ব্যবসায়ীদের আক্ষেপ, কালীপুজো এ বার অনেকটা আগে হওয়ায় নলেন গুড়ের মিষ্টি তুলে দেওয়া যাচ্ছে না ভাইদের প্লেটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন