ফুরোল ছুটি, হল না ক্লাস

বহু বছর পরে এ বারই প্রথম বিশ্বকর্মা পুজো হয়নি বিসিকেভি-তে। তবে ছুটি ছিল। উপাচার্য ধরণীধর পাত্র শনিবার হস্টেল খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেওযায় বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই বাড়ি চলে গিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০৭
Share:

অশান্তি এবং ছুটি পার করে মঙ্গলবার ফের খুলল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু ছন্দে ফিরল না।

Advertisement

বহু বছর পরে এ বারই প্রথম বিশ্বকর্মা পুজো হয়নি বিসিকেভি-তে। তবে ছুটি ছিল। উপাচার্য ধরণীধর পাত্র শনিবার হস্টেল খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেওযায় বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শে রেজিস্ট্রার জয়ন্ত সাহা সেই নির্দেশ ফিরিয়ে নিলেও বিশেষ কেউ ফিরে আসেননি। আন্দোলনে শামিল হওয়া ছাত্রছাত্রীরাই শুধু ক্যাম্পাসে থেকে গিয়েছিলেন।

তার পরে এ দিনই ছিল পুরোদস্তুর কাজের দিন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্লাসই ছিল সুনসান। হস্টেলের আবাসিকেরা এখনও বেশির ভাগই আসেননি। যে ক’জন এসেছেন, তাঁদেরও বেশির ভাগ ক্লাসে যাননি। আন্দোলনকারী ছাত্রদের তরফে কয়েক জন এ দিন রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের বক্তব্য: যাঁদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ নিয়ে গোটা অশান্তির সূত্রপাত, সেই ডিন অব স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার গৌতম চক্রবর্তী ও কৃষি অনুষদের ডিন শ্রীকান্ত দাসকে পদ থেকে সরানোর ব্যাপারে এখনও কিছু করা হয়নি। মন্ত্রী বলে গিয়েছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যে কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করাতে হবে। কিন্তু কর্মসমিতির সভা ডাকার ব্যাপারে রেজিস্ট্রার উদ্যোগী হচ্ছেন না।

Advertisement

আন্দোলনকারী ছাত্রদের অন্যতম প্রতিনিধি মৃত্যুঞ্জয় সাটিয়ার বলেন, ‘‘রেজিস্ট্রার বলেছেন, আইনত তিনি কর্মসমিতির সভা ডাকার অধিকারী নন। শিক্ষামন্ত্রী বললেও তিনি এটা করতে পারেন না। উপাচার্য ফিরলে তবেই সভা ডাকার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’’ কিন্তু তাঁদের প্রশ্ন, শিক্ষামন্ত্রীর পরামর্শে রেজিস্ট্রার যদি উপাচার্যের হস্টেল খালি করার নির্দেশ খারিজ করে দিতে পারেন, তা হলে এটাই বা করবেন না কেন? তা ছাড়া, গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে যে বহিরাগত দুষ্কৃতী দল ক্যাম্পাসে ঢুকে হামলা চালাল, তাদের নামে পুলিশে অভিযোগ করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কেন উদাসীন, সেই প্রশ্নও তাঁরা বারবার তুলছেন।

এখনও দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটের সামনে মোতায়েন থাকছে পুলিশ। হামলার দিন থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত তাদের ভূমিকা নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা প্রশ্ন তুললেও পুলিশের দাবি, তদন্ত ঠিক পথেই চলছে। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের একাংশ ফের ক্লাস বয়কটের কথা ভাবতে শুরু করেছেন। এক ছাত্রনেতার দাবি, যাঁরা বাড়ি চলে গিয়েছেন, তাঁদের অনেকের সঙ্গেই ফোনে তাঁদের কথা হচ্ছে। সুবিচার না মেলা পর্যন্ত ক্লাস বয়কট করার পক্ষেই তাঁরা সায় দিচ্ছেন। আজ, বুধবার বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীর ক্যাম্পাসে ফিরে আসার কথা। তাঁরা এলেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।তবে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করেছেন। কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক ক্লাস শুরু হবে। আর, কর্মসমিতির বৈঠক ডাকার অধিকার এক মাত্র উপাচার্যেরই আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন