সর্বদলে কে, প্রশ্ন

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন দ্য হেগ শহরে। সেখান থেকে তিনি কিন্তু আলোচনার পথে থাকারই বার্তা দিলেন। বললেন, ‘‘আমি ইতিবাচক পথেই থাকব। বৈঠক হবে। মোর্চারা না আসুক, কিন্তু প্রশাসনে থেকে আলোচনা চালানোই আমার কাজ।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০৫:১২
Share:

নিজস্ব চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী দেশে নেই। সেই সময়ে বৈঠক কেন— এই প্রশ্ন তুলে আজ, শিলিগুড়িতে বৃহস্পতিবার প্রশাসনের ডাকা সর্বদল বৈঠকে থাকছে না কংগ্রেস, বাম ও বিজেপি। মোর্চা-সহ পাহাড়ের দলগুলি মঙ্গলবারই জানিয়েছিল, এই বৈঠকে যোগ দেবে না তারা। এ বার সমতলের দলগুলিও না-আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বৈঠকের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিরোধীরা।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন দ্য হেগ শহরে। সেখান থেকে তিনি কিন্তু আলোচনার পথে থাকারই বার্তা দিলেন। বললেন, ‘‘আমি ইতিবাচক পথেই থাকব। বৈঠক হবে। মোর্চারা না আসুক, কিন্তু প্রশাসনে থেকে আলোচনা চালানোই আমার কাজ।’’ প্রশাসন সূত্রেও একই কথা বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব মলয় দে। তিনি বলেন, ‘‘কোনও রকম শর্ত ছাড়াই যে সরকার আলোচনার টেবিলে ছিল, সেই বার্তা দেওয়াই এই বৈঠকের উদ্দেশ্য।’’

তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, আসলে এই বৈঠকের মাধ্যমে একাধিক বার্তা দিতে চাইছে দল। প্রথমত, বৈঠকে কে এল না, সেটা দেখিয়ে এর পর প্রচারে যাওয়া যাবে। দার্জিলিং সমস্যা সমাধানে অন্য দলগুলির কতটা সদিচ্ছা রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হতে পারে। এ দিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে গৌতম দেব, সকলেই এই যুক্তি দিয়েছেন। যাঁরা আসবেন না, সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে মোর্চার আন্দোলনকে পরোক্ষে মদত দেওয়ার অভিযোগও তোলা যাবে। বিজেপির বিরুদ্ধে ইন্ধনের অভিযোগ এর মধ্যেই তৃণমূল তুলেছে। দ্বিতীয়ত, রাজ্য যে আলোচনায় আগ্রহী, মোর্চাই যে উল্টে অশান্তির পথে থাকতে চাইছে, দিল্লিকে সেই বার্তা দেওয়া সহজ হবে। সে ক্ষেত্রে পাহাড়কে খাদ্যসঙ্কট থেকে বাঁচাতে প্রয়োজনে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিকেও পাল্লা ভারী হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: শবাসন সামাল দিয়ে বৃষ্টিযোগ মোদীর

কংগ্রেস, বাম ও বিজেপি অবশ্য বল সরকারের কোর্টেই ঠেলে দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, একে তো মুখ্যমন্ত্রী দেশে নেই। তার উপরে বৈঠক ডেকেছেন ডিভিশনাল কমিশনার। ফলে পুরো বিষয়টিই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। কংগ্রেস আগামী ১ জুলাই প্রতিনিধিদল নিয়ে পাহাড়ে যাওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে। আর বিজেপি তুলেছে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের প্রসঙ্গ। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘সর্বদল বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া সম্ভব নয়। বরং ত্রিপাক্ষিক চাই।’’ ঘটনাচক্রে, মোর্চারও দাবি, দার্জিলিং সমস্যায় কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করুক।

কিন্তু কেন্দ্র কি এখনই ত্রিপাক্ষিকে আগ্রহী? এর আগে মমতার সঙ্গে কথার পরে রাজনাথ সিংহ টুইট করে ‘সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে’ আলোচনায় বসতে বলেছিলেন। বুধবার তাঁর মন্ত্রক জানিয়েছে, এই মুহূর্তে দার্জিলিং নিয়ে হস্তক্ষেপের কোনও প্রশ্ন নেই।

প্রশ্ন উঠেছে জিটিএ-র ভবিষ্যৎ নিয়েও। মঙ্গলবার মোর্চা জানায়, তারা আর জিটিএ-তে থাকবে না। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউই ইস্তফাপত্র দেননি। কেন্দ্র বলছে, লিখিত ভাবে সবাইকে জানাতে হবে। কিন্তু কী ভাবে? বিমল গুরুঙ্গ, আশা গুরুঙ্গ, বিনয় তামাঙ্গরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তা হলে? রাজ্য জানিয়েছে, মোর্চা জিটিএ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরে দাঁড়ালে সেখানে ‘প্রশাসক’ বসানো হবে।

বন্‌ধে যাঁরা সরকারি দফতরে অনুপস্থিত, তাঁদের থেকে কারণ জানতে চাওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হতে চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন