বেনামি সম্পত্তি খুঁজতে রাজ্যেও হানা আয়করের

এত দিন শুধু জরিমানা করে ছেড়ে দিত। এ বার পশ্চিমবঙ্গেও বেনামি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কাজে নেমে পড়ল আয়কর দফতর। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ যাদবের বাড়িতে সম্প্রতি হানা দিয়েছে আয়কর দফতর।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:৪৫
Share:

এত দিন শুধু জরিমানা করে ছেড়ে দিত। এ বার পশ্চিমবঙ্গেও বেনামি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কাজে নেমে পড়ল আয়কর দফতর। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ যাদবের বাড়িতে সম্প্রতি হানা দিয়েছে আয়কর দফতর। এ রাজ্যেও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ এসে পৌঁছেছে দিল্লি থেকে। তবে আয়কর কর্তাদের দাবি, দেশ জুড়েই বেনামি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অভিযান চলছে।

Advertisement

দফতর সূত্রের খবর, অতি সম্প্রতি কলকাতার টালিগঞ্জে একটি ফ্ল্যাট এবং ব্যারাকপুর ও খড়দহে চারটি জমি বাজেয়াপ্ত করার নোটিস দিয়েছে আয়কর। যার অর্থ, ওই ফ্ল্যাট বা জমি আর কেনাবেচা করা যাবে না। ফ্ল্যাটে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা আপাতত থাকতে পারবেন। কিন্তু, বাজেয়াপ্ত করা জমিতে কোনও নির্মাণ করা যাবে না। এ রকম মোট ১১টি ক্ষেত্রে নোটিস জারি করা হয়েছে বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

নোটিস জারি হওয়া ওই বেনামি সম্পত্তির মালিক কারা, আয়কর দফতর তা জানায়নি। তবে সিবিআই, ইডি-র মতো এ ক্ষেত্রেও আয়কর দফতরের বিরুদ্ধে শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত চরমে উঠেছে। সবচেয়ে বেশি তিক্ততা তৈরি হয়েছে রাজ্যের তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে হেনস্থা করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। সারদা-সহ বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থা, নারদ নিয়ে সিবিআই ও ইডি-র তদন্ত চলছে। এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূল নেতাদের দিকে। এখন এমন অভিযোগ উঠেছে, রাজ্যের শাসক দলের বহু নেতা-নেত্রী বেনামে প্রচুর সম্পত্তির মালিক। তাই আয়কর হানায় নতুন করে হেনস্থার অভিযোগ উঠতে
পারে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা।

Advertisement

আরও পড়ুন:স্বাস্থ্য বিল কেন, রাজ্য জানাবে হলফনামায়

আয়কর অফিসারদের দাবি, ঘুরপথে যাঁরা আয় করেন, তাঁরা বিশাল অঙ্কের টাকা বেনামে লগ্নি করেন। এঁদের মধ্যে ব্যবসায়ী যেমন রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন রাজনৈতিক নেতা। ‘‘নিজের নামে বিনিয়োগ করলে ধরা পড়ে যাবেন বলে কোনও নেতা বা ব্যবসায়ী অন্যের নামে বিনিয়োগ করেন। সেই বিনিয়োগ থেকে যে
লাভ হয়, তা ঘুরপথে সেই ব্যবসায়ী বা নেতার কাছে পৌঁছে যায়। এই ঘুরপথে ব্যবসা বন্ধ করতেই বেনামি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে’’ — বললেন এক অফিসার।

১৯৮৮ সালের আয়কর আইনে বেনামি সম্পত্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গত বছরের ১ নভেম্বর সেই আইনে সংশোধন করে আয়কর দফতরের হাতে নতুন ৬৩টি ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই আয়কর কর্তার কথায়, ‘‘৩০ লক্ষ টাকার বেশি অঙ্কে সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন হলেই আমাদের কাছে খবর আসে। এখন আমরা নিজেরাই ৫ লক্ষ টাকার বেশি সম্পত্তির উপরেও নজরদারি শুরু করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement