কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসক দলের ছাত্র শাখা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র কোন্দল মেটাতে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই হস্তক্ষেপ করলেন। শুক্রবার তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতাদের নির্দেশ দেন, তাঁদের নিজেদের মধ্যে কোনও গোলমাল থেকে থাকলে তা যেন অবিলম্বে মিটিয়ে ফেলা হয়। কোনও সমস্যায় পড়লে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-কাজিয়া মেটাতে বেশ কয়েক দফায় নরম-গরম ব্যবস্থা নিয়েছেন পার্থবাবু। কিন্তু তাতে কাজ যে বিশেষ হয়নি, সম্প্রতি কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর কাজিয়ায় উপাচার্যের হেনস্থাই তার প্রমাণ। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের নির্দেশ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে শিক্ষাজগৎ।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন দলীয় কোর কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানেই ছাত্রনেতাদের ঝগড়া মেটানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবদমান দুই গোষ্ঠীর নেত্রী লগ্নজিতা চক্রবর্তী ও নেতা আব্দুল কাইয়ুম মোল্লা-সহ বেশ কয়েক জন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। মুখ্যমন্ত্রী তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মমতা শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন, তিনি যেন ১৫ দিন অন্তর ছাত্র-যুবদের নিয়ে বৈঠক করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত হন উপাচার্য। শিক্ষামন্ত্রী বিবদমান দু’পক্ষকে ডেকে উপাচার্যের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। কিন্তু শিক্ষা শিবিরের অনেকেরই আশঙ্কা, বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি-র কোন্দল সহজে মেটার নয়। সুগত মারজিৎ উপাচার্য থাকাকালীন ছাত্রনেতাদের হাতে শিক্ষক-নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছিল। সুগতবাবু সেই শিক্ষকের কাছে ছাত্রনেতাদের ক্ষমা চাইতে বাধ্য করিয়েছিলেন। তার পরেও ছাত্র সংগঠনের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রশমিত হয়নি। এ বার নিগৃহীত হয়েছেন খোদ উপাচার্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা যে তাঁর আদৌ পছন্দ নয়, এ দিন তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা ঘটনা সম্পর্কে তিনি যে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল, সেটাও স্পষ্ট করে দেন মমতা। টিএমসিপি-র সভানেত্রী জয়া দত্তও এ দিনের বৈঠকে ছিলেন।