কোন্দল তুঙ্গে, দফতরে তালা খুলতে নাজেহাল ফব নেতৃত্ব

পুরভোটে সদ্য উত্তর ২৪ পরগনায় শোচনীয় ফল হয়েছে বামেদের। তার পরেই জেলায় বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্দরে মাথাচাড়া দিয়েছে তীব্র কোন্দল। দলেরই দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে তালা পড়েছে বারাসতে দলের জেলা দফতরে! বিবাদমান দুই গোষ্ঠী এখনও সমঝোতায় আসতে নারাজ। জেলা বামফ্রন্টের মধ্যেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতেও প্রভাব পড়বে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৫ ০৩:১৭
Share:

তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ও বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে রাজ্য পেনশনার্স সমিতির সমাবেশে, বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

পুরভোটে সদ্য উত্তর ২৪ পরগনায় শোচনীয় ফল হয়েছে বামেদের। তার পরেই জেলায় বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্দরে মাথাচাড়া দিয়েছে তীব্র কোন্দল। দলেরই দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে তালা পড়েছে বারাসতে দলের জেলা দফতরে! বিবাদমান দুই গোষ্ঠী এখনও সমঝোতায় আসতে নারাজ। জেলা বামফ্রন্টের মধ্যেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতিতেও প্রভাব পড়বে।

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনা ফব-র অন্দরে জেলা সম্পাদক হরিপদ বিশ্বাসের অনুগামীদের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ নেতা সরল দেবের গোষ্ঠীর বিবাদ অনেক দিনের। ফব নেতৃত্ব দলে কমিশন বসিয়েও সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। ক’দিন আগে ফব-র রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে কাজ চালানোর জন্য তদারকি কমিটি গড়া হয়েছে। তার মধ্যেই সাম্প্রতিক পুরভোটে ফব-র তরফে আইনি গাফিলতিতে চার প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। হরিপদ গোষ্ঠীর দাবি, সরলবাবুরা ইচ্ছা করেই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তৃণমূলকে সুবিধা করে দিতে। এমন উত্তপ্ত আবহেই কয়েক দিন আগে বারাসতে ফব-র জেলা দফতর দখলের চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং বারাসতের কাউন্সিলর সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেই চেষ্টা প্রতিহত করা হয়। পরপর দু’দিন সরলবাবুর অনুগামীরা দুষ্কৃতী বাহিনীর মাধ্যমে জেলা দফতর দখল করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করে সেখানে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন হরিপদবাবুরা। সরলবাবুদের তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, জেলা দফতরে প্রবেশের অধিকার দলের সকলের রয়েছে!

দলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে জেলায় অচলাবস্থা তৈরির খবর ফব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষের কাছেও পৌঁছেছে। কিন্তু এখনও কার্যকরী পদক্ষেপ হয়নি রাজ্য নেতৃত্বের তরফে। দলেরই একাংশের ক্ষোভ, অশোকবাবু চাইলে অনেক আগেই এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলা যেত। তাঁদের যুক্তি, জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ কর্মী-সমর্থক হরিপদবাবুর দিকেই। তাই তাঁদের কোণঠাসা করে কোনও সমাধান সম্ভব নয়। অথচ বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখে জটিল করে তোলা হয়েছে! আপাতত অচলাবস্থা কাটাতে কী করা হবে? তদারকি কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক, রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জয়ন্ত রায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘দিল্লিতে ২৩ মে আমাদের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক। তার পরে উত্তর ২৪ পরগনার দুই গোষ্ঠীকেই ডেকে পাঠানো হবে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।’’ হরিপদবাবুদের ভেঙে দেওয়া জেলা কমিটি আবার ঘরোয়া ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে, তাঁদের বক্তব্য না শোনা হলে আগামী বিধানসভা ভোটে জগদ্দল, দেগঙ্গা, বারাসত
এবং বাগদা— জেলার যে চারটি বিধানসভা আসনে ফব লড়ে, সেখানে তাঁরা প্রার্থী দেবেন না! পরিস্থিতি যে এতটা ঘোরালো হয়ে উঠেছে, আলিমুদ্দিনে সেই খবর গিয়েছে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর কাছেও। তাঁরা নজর রাখছেন ফব নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের দিকে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন