ঘন ঘন খোঁজ টম অ্যান্ড জেরির

ভাল নাম অ্যাঞ্জেলা-অ্যাঞ্জেলি। ডাকনাম টম আর জেরি। বাবা-মা-দাদু-দিদার দেওয়া আহ্লাদের নাম না হোক, স্নেহ কম পাচ্ছে না তারা। যাদের কাছ থেকে পাচ্ছে, তাঁরাই নাম রেখেছেন কয়েক দিন বয়সের দুই শিশুর।

Advertisement

নির্মল বসু

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৪
Share:

স্নেহের ছায়ায়। নিজস্ব চিত্র।

ভাল নাম অ্যাঞ্জেলা-অ্যাঞ্জেলি। ডাকনাম টম আর জেরি।

Advertisement

বাবা-মা-দাদু-দিদার দেওয়া আহ্লাদের নাম না হোক, স্নেহ কম পাচ্ছে না তারা। যাদের কাছ থেকে পাচ্ছে, তাঁরাই নাম রেখেছেন কয়েক দিন বয়সের দুই শিশুর। যাদের সোমবার রাতে বাদুড়িয়ার সোহান নার্সিংহোম থেকে উদ্ধার করেছিল সিআইডি। আপাতত নার্স-আয়াদের কোলে তারা হাত-পা ছুড়ছে আরামে।

শিশু দু’টির বাড়ি কোথায়, পারিবারিক পরিচয় কী, এখনও জানা নেই কিচ্ছু। তবে আপাতত বসিরহাট জেলা হাসপাতালের এসএনসিইউ-তে নীল আলো জ্বালা ইনকিউবিটরে টম আর জেরির পরিচর্যায় ব্যস্ত চিকিৎসক এবং নার্সরা।

Advertisement

বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপার শ্যামল হালদার জানান, ওই বিশেষ ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন ৮ জন মেডিক্যাল অফিসার এবং ১০ জন নার্সিং স্টাফ। এখনও সপ্তাহ পার হয়নি। এরই মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের নয়নের মনি হয়ে গিয়েছে বাপ-মা-হারা ওই দুই শিশু। ওয়ার্ডের চিকিৎসক শুভ দাস বলেন, ‘‘ঈশ্বরের দূত হয়ে এসেছে ওরা। তাই নাম রাখা হয়েছে অ্যাঞ্জেল-অ্যাঞ্জেলা (ইংরেজি ভাষায় যার অর্থ ঈশ্বরপ্রেরিত দূত)। ডাকনাম, টম আর জেরি।’’

সিআইডি নিয়ে যাচ্ছে বিমল অধিকারীকে। ইনসেটে, তার ঠাকুরপুকুরের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

টমের আবার জন্ডিস হওয়ায় কিছুটা চিন্তিত সকলে। সুপারের কথায়, ‘‘জন্মানোর পরে প্রথম সপ্তাহ শিশুদের ওজন কমতে থাকে। পরে তা আবার ঠিক হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তির সময়ে প্রিম্যাচিয়োর টমের ওজন ছিল ২ কিলো ৯ শো গ্রাম। জেরি ছিল ১ কেজি ৩৭৫ গ্রাম ওজনের। বর্তমানে টম ১ কেজি ৪২০ গ্রামের হয়েছে। জেরির ওজন ১ কেজি ৪৬০ গ্রাম।’’ ধীরে ধীরে দিনে ৬০-১০০ গ্রাম করে ওজন বাড়ে শিশুদের, জানালেন সুপার।

আর্জিনা খাতুন, সুমিত্রা মেটারা নার্সিংয়ের দায়িত্ব সামলান। তাঁরা জানালেন, আপাতত দুই খুদে শুধু উজ্জ্বল চোখ নিয়ে পিট পিট করে তাকায়। কিন্তু তাতেই বড্ড মায়া পড়ে গিয়েছে। আসলে, এখানে যে সব বাচ্চা আসে, সকলেরই সঙ্গে তাদের মা থাকেন। বাবারা আসেন। আত্মীয়-পরিজনেরা খোঁজ-খবর নেন। কিন্তু টম-জেরির ক্ষেত্রে তেমন কেউ নেই। তাই ওদের উপর কেমন যেন বা়তি টান বোধ করছেন সকলেই। একই কথা জানালেন চৈতালি রায়, মিতা দাসরা। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে যাঁরাই হাসপাতালে আসছেন, অনেকেই খোঁজ-খবর করছেন টম-জেরির। রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওই দুই নাম।

ওরা যেন ভাল পরিবারের কাছে পৌঁছয়, এখন সেটাই চাইছেন টম-জেরির হঠাৎ তৈরি হওয়া আত্মীয়-পরিজনেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন