প্রতীকী ছবি।
দিনের বেলায় ফ্যান না চালালে অস্বস্তি বাড়ছে। কিন্তু বেশি রাতে বা ভোরের দিকে ফ্যান তো লাগছেই না, বরং গায়ে চাদর টেনে শুতে হচ্ছে। ফ্যান চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে আর রক্ষে নেই! সকালে ঘুম ভাঙতেই গলায় ব্যথা। সঙ্গে জ্বর জ্বর ভাব।
ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়েছিল আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা। সকালের শিরশিরে ভাব বেলা গড়াতেই বদলে যাচ্ছে ঘাম ঝরানো গরমে। আর তাপমাত্রার এই ফারাকই শরীরে ডেকে আনছে নানা রোগভোগ।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অদ্ভুত এই আবহাওয়ার জেরে জ্বর-কাশি-সর্দি এখন ঘরে ঘরে। সঙ্গে গায়ে ব্যথা। শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ জানান, বহু শিশু ভাইরাসঘটিত জ্বরে ভুগছে। শরীরের তাপমাত্রা তো বাড়ছেই। সঙ্গে সর্দি-কাশি। অনেক সময়ে নাক দিয়ে অল্প রক্তও বেরোচ্ছে। জ্বরের পাশাপাশি শিশুরা পেটের সমস্যাতেও ভুগছে। অপূর্ববাবুর কথায়, ‘‘ভাইরাস সংক্রমণের জন্যই জ্বর হচ্ছে। হাল্কা খাবার ও বেশি পরিমাণ জল খাওয়া দরকার।’’
বাড়ছে ফুসফুসের সমস্যাও। বক্ষরোগ চিকিৎসক রাজা ধর জানান, হাঁপানির মতো রোগ এ দেশে ঋতু পরিবর্তনের সময়ে বেশি জোরদার হয়। আর শারীরিক ভাবে দুর্বল হলে নিউমোনিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও এ সময়ে খুব বেশি থাকে। তাঁর কথায়, ‘‘শীতের শেষ আর গরমের শুরুতে বাতাসে ধুলো বেশি থাকে। যা থেকে ফুসফুসের সমস্যা বাড়ে। এ সময়ে মুখোশ ব্যবহার করা উচিত। টিকা নিয়ে রাখাও ভাল।’’ রাজাবাবুর পরামর্শ, ঘাম হলেই ফ্যান চালানো বা স্নান সেরে ভেজা চুলে এসি ঘরে ঢোকা চলবে না।
মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার জানালেন, ফুসফুসের সমস্যার পাশাপাশি এ সময়ে জ্বর ও কাশিতেও ভুগছেন অনেকে। তিনি জানান, ঋতু পরিবর্তনের সময়ে এমনটা স্বাভাবিক। কিন্তু এ বছর রোগীদের দেহের তাপমাত্রা অনেকটা বেড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি, অনেকেরই জ্বরের সঙ্গে গায়ে গুটি দেখা দিচ্ছে। তবে তা সব সময়ে বসন্ত নয়।
অরুণাংশুবাবুর পরামর্শ, বেশি পরিমাণ জল, আনাজ এবং ফল খাওয়া প্রয়োজন। তাঁর কথায়, ‘‘নাক ও মুখের মাধ্যমেই জীবাণু শরীরে ঢোকে। তাই মুখোশ ব্যবহারের পাশাপাশি মুখ ধোয়াও জরুরি।’’