প্রতীকী ছবি।
পুজো এ বার আগে। নিপাট নীল আকাশ, পেঁজা তুলোর মতো সাদা মেঘ আর উজ্জ্বল রোদে শরতের গন্ধও একটু আগে থেকে মালুম হচ্ছিল। তবে আজ, মঙ্গলবার মহালয়ার দিনে সাময়িক ভাবে উধাও হয়ে যেতে পারে শরতের সেই চেনা পরিবেশ। জোড়া ঘূর্ণাবর্তের কারিকুরিতে দেবীপক্ষের সূচনাতেই কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ বৃষ্টিতে কমবেশি ভিজতে পারে বলে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস।
ঘূর্ণাবর্ত এ বার বারে বারেই চমক লাগিয়ে তটস্থ করে রেখেছে গাঙ্গেয় বঙ্গকে। বন্যায় নাস্তানাবুদ হয়েছে দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গ। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। অন্য একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপরে। এই জো়ড়া ফলাতেই আজ শারদীয় আকাশ ঢেকে যেতে পারে বর্ষণের মেঘে।
মহানগরের কিছু এলাকায় রবিবার রাতে বৃষ্টি হয়েছে। সোমবারেও দুপুরের পরে মেঘের আনাগোনা শুরু হয়। কলকাতা এবং লাগোয়া কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে দু’-এক পশলা। দক্ষিণবঙ্গ থেকে বর্ষার বিদায় নেওয়ার কথা ৮ অক্টোবর। সেই হিসেবে এ বছর পুজো পড়েছে বর্ষার সময়সীমার মধ্যে। ফলে মহোৎসবের দিনগুলিতে আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জনমানসে প্রশ্নের অন্ত নেই।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, মহালয়ায় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তবে কাল, বুধবার থেকে দু’টি ঘূর্ণাবর্তই দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। সে-ক্ষেত্রে আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা আছে। ওই জোড়া ঘূর্ণাবর্ত দুর্বল হওয়ার পরেই বলা যেতে পারে, পুজোর আবহাওয়া কেমন যাবে।
পুজোর বাজার প্রায় শেষ লগ্নে পৌঁছেছে। মহালয়ার দিন মারকাটারি ব্যবসার আশা করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে মুষড়ে পড়েছেন তাঁরা। নিউ মার্কেটের এক দোকানদারের কথায়, ‘‘এ বছর বিকিকিনির তেমন রমরমা নেই। এর উপরে মহালয়ার মতো দিনে বৃষ্টি হলে ব্যবসা মার খাবেই।’’ হাতিবাগানে। রাস্তার পাশে পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসা এক দোকানি জানান, মহালয়ায় জোরালো বৃষ্টি হলে ব্যবসা তো মার খাবেই। জিনিসপত্রেরও ক্ষতির আশঙ্কা আছে।
চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন পুজো কমিটির কর্তারাও। মণ্ডপে মণ্ডপে তুলির টান এখন শেষ পর্বে। এমন সময়ে বৃষ্টি হলে ক্ষতি হতে পারে সাজসজ্জার। উত্তর কলকাতার এক পুজোকর্তার কথায়, ‘‘জোর বৃষ্টি হলে সরু গলিতে জল জমবে। চতুর্থীর মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব না।’’ দক্ষিণ কলকাতায় লোকশিল্পকে থিম করে পুজোর লড়াইয়ে নামা একটি ক্লাবের সম্পাদক মণ্ডপ ঢাকার জন্য এ দিনই পলিথিন আনিয়ে রেখেছেন।
দেবীপক্ষের সূচনায় দুর্গতিনাশিনী দুর্গা বনাম বরুণদেবের টক্কর কেমন জমে, সেটাই দেখার।