যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্রী নিশাত রিমা লস্করের পাশে দাঁড়াল শিক্ষক সংগঠন ‘জুটা’। হস্টেলে ওই ছাত্রীকে জায়গা দিতে রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এবং ডিন অব স্টুডেন্টস রজত রায়ের দাবি পেশ করেছে তারা। এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে যাদবপুরে ভর্তি হয়েছেন নিশাত। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, মুসলিম হওয়ার জন্য যাদবপুর অঞ্চলে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকার জায়গা পাচ্ছেন না তিনি। রেজিস্ট্রার শনিবার জানান, ওই ছাত্রীর জন্য উপযুক্ত থাকার ব্যবস্থাই করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘ঠিক সময় এ ধরনের খবর পেলে আমাদের ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়।’’
কলকাতায় মুসলিমদের ঘর ভাড়া দেওয়া নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশের ছুতমার্গ নতুন কম নয়। সেই কাহিনিতে সাম্প্রতিক সংযোজন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর-মজিলপুরের নিশাত। তাঁর ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে ১ অগস্ট থেকে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ঘর দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে ১৫ অগস্টের পর। সে কারণে, ‘পেয়িং গেস্ট’ থাকতে চেয়েছিলেন নিশাত।
নিশাতের বাবা ইকতিয়ার বলেন, ‘‘অনলাইন সাইট থেকে বাড়ির সন্ধান পেয়ে সুলেখা এলাকায় গিয়েছিলাম। বাড়ি পছন্দ হয়। জানিয়ে আসি, পরের দিন মেয়েকে নিয়ে আসব।’’ কিন্তু মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার আগে ফোন করলে গৃহকর্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘মেয়ের নাম কী?’ ইকতিয়ার মেয়ের নাম জানালে উত্তর আসে, ‘মুসলিম? কোনও মুসলিমকে ঘর ভাড়া দিই না।’ সেই থেকে জয়নগর থেকে যাদবপুর, রোজ যাতায়াত করতে হচ্ছে নিশাতকে।
আরও পড়ুন: হলদিয়ার যুদ্ধজয়ীই বাঙালির সেরার সেরা
এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই এগিয়ে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন। শুধু তাই নয়, এগিয়ে এসেছেন প্রচুর সাধারণ মানুষও। তাঁদের আশ্বাস, নিশাতকে তাঁরা বাড়িতে থাকতে দিতে রাজি। শনিবার জুটার সহ-সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে আপাতত থাকার জায়গা না হলে যে ক’দিন নিশাত হস্টেল পাবেন না তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউসেই রাখার ব্যবস্থা করা হবে।
নিশাতের বাবা ইকতিয়ার এ দিন জানিয়েছেন, আমজনতার কাছ থেকে সাড়া পেয়ে তিনি অভিভূত। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করা জায়গাতেই তাঁর মেয়ে থাকতে চান।