যাদবপুরের গবেষক ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ মেসে 

শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ বেলদার দেউলি এলাকার ওই মেস থেকে প্রিয়দীপের দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলদা ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০১
Share:

প্রিয়দীপ দাস

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতের এক গবেষক ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল বেলদার এক মেসে। প্রিয়দীপ দাস (২৮) নামে ওই ছাত্রের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরেরই কেশিয়াড়ি থানা এলাকার ধলবেলুন গ্রামে। অবসাদেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।

Advertisement

শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ বেলদার দেউলি এলাকার ওই মেস থেকে প্রিয়দীপের দেহ উদ্ধার হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডভান্সড অ্যালজেব্রা নিয়ে পিএইচডি করছিলেন প্রিয়দীপ। তাঁর বন্ধুদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক হল এই মেসে থাকছিলেন ওই ছাত্র। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুখেন্দু করের অধীনে গবেষণা করছিলেন তিনি। বেলদা কলেজের গণিতের অধ্যাপক বাসুদেব ধাড়ার সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ ছিল প্রিয়দীপের। বাসুদেব জানিয়েছেন, কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা আশানুরূপ না হওয়ায় মুষড়ে পড়েছিলেন প্রিয়দীপ। তাঁর বন্ধুবান্ধবরাও জানাচ্ছেন, সেই কারণে অবসাদে ভুগছিলেন ওই ছাত্র। কলকাতায় চিকিৎসাও চলছিল। কলেজ সার্ভিস কমিশনের গণিতের পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পরে সফলদের তালিকা নিয়ে বিতর্কও চলছে।

শিক্ষক বাসুদেব বলেন, ‘‘ওর মানসিক সমস্যা জেনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছিলাম। পরীক্ষার ফল আর কেরিয়ার নিয়েই বেশি ভাবত ছেলেটা। এমন কাণ্ড করবে ভাবতে পারিনি।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুখেন্দু করের কথায়, ‘‘প্রিয়দীপ খুবই মনোযোগী ছাত্র ছিলেন। তাঁর তিনটি গবেষণাপত্র ইতিমধ্যেই প্রকাশিত। ওঁর এমন পরিণতিতে খুব খারাপ লাগছে।’’

Advertisement

দেউলির মেসে থাকেন প্রিয়দীপের বন্ধু অমল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘ও এমনিতেই কম কথা বলত। খুব গান শুনত। এ দিন সকালে উঠে আমি বেরিয়ে যাই। দুপুর একটা নাগাদ ফিরে দেখি, ওর ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।’’ পরে দরজা ভেঙে পুলিশ প্রিয়দীপের ঝুলন্ত দেহ

উদ্ধার করে। প্রিয়দীপের আর এক বন্ধু বেলদা কলেজের অতিথি শিক্ষক দেবাশিস মাইতি বলেন, ‘‘গত কাল রাতেও একসঙ্গে খেয়েছি। ইন্টারভিউ খারাপ হয়েছে বলত। এমনটা যে করে বসবে বুঝিনি।’’

চার ভাইয়ের মধ্যে প্রিয়দীপ সেজো। বাবা যতীন্দ্র দাস চাষবাস করেন। গ্রামের স্কুলে পড়ার পাট চুকিয়ে বেলদা কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন প্রিয়দীপ। তার পরে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপ্লায়েড ম্যাথেমেটিক্স নিয়ে স্নাতকোত্তর করেন। তার পরে যাদবপুরে পিএইচডি করছিলেন। প্রিয়দীপ যে অবসাদে ভুগছিলেন, মানছেন তাঁর জামাইবাবু দিলীপ দাস। তিনি বলেন, ‘‘ঘুম হত

না বলে চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ খেত। পুজোয় বাড়িতে ছিল। আর মেসে সপ্তাহে তিন দিন থাকত। হঠাৎ যে কী হল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন